বালুরঘাট হাসপাতালে অব্যবস্থা। ছবি: অমিত মোহান্ত।
দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের পতিরাম এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে। গত শনিবার ওই এলাকার বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা কুণ্ডু (১৪) নামে অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্রীর ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়। ওই এলাকার একাধিক বাসিন্দা জ্বরে ভুগছেন। সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত পতিরাম এবং সন্নিহিত উত্তর রায়পুর এলাকা থেকে জ্বরে আক্রান্ত ১৯ জনকে বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তার মধ্যে রাতেই গুরুতর অসুস্থ দুলাল সরকার এবং মমতা ঘোষ নামে দু’জনকে বালুরঘাট হাসপাতাল থেকে মালদহে রেফার করা হয়।
এ দিন আবার মালদহ থেকে ওই দু’জনকে কলকাতায় রেফার করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন আত্মীয়রা। তাঁদের অভিযোগ, রাতে বালুরঘাট হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসা না করেই রেফার করে দেওয়া হয়েছে। মালদহের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব নিতে চাননি।
এ দিকে প্রকোপ ক্রমশ ছড়িয়ে পড়লেও জেলা স্বাস্থ্য দফতর এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে রোগ নিরাময়ে কোনও তৎপরতা নেই বলে ডিওয়াইএফআই-এর তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে। বালুরঘাট হাসাপাতালের বেহাল চিকিৎসা পরিষেবার অভিযোগ নিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে-র বক্তব্য জানা যায়নি। ফোনে তিনি বলেন, ‘‘মিটিঙে ব্যস্ত আছি।’’ জেলাশাসক সঞ্জয় বসু ঘটনার কথা শুনে উদ্বেগ প্রকাশ করে গোটা বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেবেন বলে জানিয়েছেন।
দক্ষিণ দিনাজপুরের ডিওয়াইএফআই-এর জেলা সম্পাদক অলিন্দ সরকার অভিযোগ করেন, ‘‘বালুরঘাটের পতিরামের পাশাপাশি চকভৃগু এলাকায় ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব ছড়িয়েছে। রোজ জ্বর নিয়ে মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। অথচ হাসপাতালে গিয়ে একজন চিকিৎসক ছাড়া অন্য কোনও চিকিৎসকের দেখা মিলছে না।’’
এ দিন সন্ধ্যায় হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, একটি ওয়ার্ডে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত সমস্ত রোগীকে গাদাগাদি করে রাখা হয়েছে। রোগীরা ঘুমোতে পারছেন না বলে অভিযোগ। মেঝেতেও শোওয়ার জায়গা নেই। বিশেষজ্ঞ কয়ক জন চিকিৎসকও ছুটিতে। ফলে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের অব্যবস্থার বিষয়টি উপস্থিত চিকিৎসকেরা স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, রোজ জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা ভর্তি হচ্ছেন। কয়েকজন চিকিৎসক দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।