প্রতীকী ছবি।
সরকারি হিসেবে জেলায় ফিরেছিলেন ২০ হাজারেরও বেশি পরিযায়ী শ্রমিক। সরকারি তথ্য জানাচ্ছে, তাঁদের মধ্যে ২০০ জনের কাছাকাছি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সেই হিসেবে পরিযায়ীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার মাত্র এক শতাংশ। এই তথ্য স্বস্তি দিয়েছে জেলা প্রশাসনকে। পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়িতে ফিরেছেন শুনলেই আতঙ্ক ছড়িয়েছিল জলপাইগুড়িতে। বিক্ষোভও হয়েছিল, পুলিশও ডাকত আশেপাশের বাসিন্দারা। প্রশাসনের দাবি, পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। জেলা প্রশাসনের একাংশের দাবি, এই তথ্য দেখিয়ে সচেতনতা প্রচার হতে পারে।
জলপাইগুড়ির জেলাশাসক অভিষেক তিওয়ারি বলেন, “পরিযায়ী শ্রমিকরা ফেরার পরেই কোয়রান্টিন করা হয়েছিল। যথাযথ পদক্ষেপ করা হয়েছিল। তার জেরে করোনা সংক্রমণ কম হয়েছে। চা বলয়েও বেশি সংক্রমণের খবর নেই।”
চিকিৎসকদের একটা অংশের দাবি, জুন থেকে উপসর্গহীনদের করোনা পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। তার জেরে ঘরে ফেরা অনেক শ্রমিকের করোনা পরীক্ষাই হয়নি। এই যুক্তিতে তাঁদের দাবি, প্রশাসন যে হিসেবের কথা বলছে তার সঙ্গে বাস্তব চিত্রের ফারাক রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, কোয়রান্টিনে যারা ছিলেন তাঁদের পরীক্ষা করে সংক্রমণ মিলেছে এমন সংখ্যা ২১০ জন। তাঁদের মধ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা ১৮০-এর বেশি হবে না বলে দাবি।
ইতিমধ্যে জলপাইগুড়ি জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছ’শো ছাড়িয়েছে। আক্রান্তের বড় অংশই শিলিগুড়ি পুর এলাকা এবং সেই এলাকার আশেপাশের বাসিন্দারা। জেলার বিন্নাগুড়ি সেনা ছাউনিতে থাকা জওয়ানদেরও বড় সংখ্যায় সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। শহরের বাজার এলাকা থেকেও ব্যাপক হারে সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে দাবি। জলপাইগুড়ি শহরে লকডাউন চলছে। যদিও তা ঠিকমতো মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। শুক্রবারই শহরে নতুন করে পাঁচ জনের সংক্রমণ মিলেছে। শহরে পাঁচটি নতুন কন্টেনমেন্ট জ়়োন হয়েছে। জেলা প্রশাসনের আধিকারিক এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদেরও লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ হয়েছে।
করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গের বিশেষ আধিকারিক (ওএসডি) সুশান্ত রায় বলেন, “পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরা শুরু হতেই আমরা সতকর্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। সে কারণে সংক্রমণ ছড়াতে পারেনি। তবে শহরের আম জনতারা ঠিক ভাবে লকডাউন মানছেন না।’’