প্রতীকী ছবি।
করোনার চিকিৎসা নিয়ে অতিরিক্ত বিল এবং অনিয়মের অভিযোগে শিলিগুড়ির কয়েকটি নির্দিষ্ট নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য দফতরে লিখিত রিপোর্ট পাঠাচ্ছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য। অথচ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না তা নিয়ে উঠছে বিস্তর প্রশ্ন।
বিশেষ করে যেখানে নার্সিংহোমগুলির লাইসেন্স অনুমোদন করেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতর। সেই কারণে বাসিন্দা এবং করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়ানো সংগঠনগুলিরও একাংশের দাবি, জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফেই সেগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তা না করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দিকে বল ঠেলে দেওয়ার পিছনে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে ‘ধীরে চলো’ নীতি কার্যকর করা হচ্ছে কি না তা নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করেছে তারা। মানুষ বিপদে পরে অভিযোগ জানালেও এই পরিস্থিতিতে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য দফতর হাত গুটিয়ে থাকায় দুর্ভোগ বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। শহরে বিভিন্ন মহলেই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা নার্সিংহোমগুলির অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ক্ষেত্রে ‘ঠুঁটো জগন্নাথ’ হয়েই থাকবেন?
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে যে সমস্ত অভিযোগ উঠেছে সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট কয়েকটি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য দফতরে রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে। সেখান থেকে যে ব্যবস্থা নিতে বলা হবে সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে।’’
শিলিগুড়ির নার্সিংহোমগুলিতে বিভিন্ন সময়ে করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা করাতে গিয়ে মাত্রাতিরিক্ত বিলের দাপটে ‘ঘটিবাটি বিক্রি’ করার মতো পরিস্থিতি হচ্ছে অনেকের। অনেকেই নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন। সেখানে এক দেড় মাস ধরে জেলা স্বাস্থ্য দফতর তা নিয়ন্ত্রণ করতে কোনও ব্যবস্থাই কেন নিতে পারেনি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমনকি, পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের তরফেও চেয়ারপার্সন গৌতম দেব স্বাস্থ্য দফতর, পুরসভা, প্রশাসনকে নিয়ে বৈঠক করে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরেও কোন অজ্ঞাত কারণে ব্যবস্থা নেওয়া থেকে জেলা স্বাস্থ্য দফতর বিলম্ব করছে তা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ পেয়েও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না তা তারাও বুঝতে পারছেন না।
কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক, শিলিগুড়ি ফাইট করোনার তরফে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে অতিরিক্ত বিল এবং সে ক্ষেত্রে নানা অনিয়ম নিয়ে ব্যবস্থা নিতে আর্জি জানানো হয়েছিল। ফাইট করোনার কর্মকর্তা অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘আমরা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে জানাতে চাইব, কেন তিনি ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। নিশ্চয়ই কোনও চাপ রয়েছে।’’ কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্কের তরফে কল্যাণ খান বলেন, ‘‘জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হাতেই ক্ষমতা রয়েছে ব্যবস্থা নেওয়ার। তারা ব্যবস্থা নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানালেই তো পারতেন। তাতে বাসিন্দাদের দুর্ভোগ কম হত।’’