ফাইল চিত্র
রাজ্যের বিভিন্ন জাতীয় উদ্যান, অভয়ারণ্যের সঙ্গে মঙ্গলবার থেকে বন্ধ হয়ে গেল দার্জিলিং চিড়িয়াখানাও। একইভাবে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইন্সটিটিউটের (এইচএমআই) মিউজিয়াম এবং অ্যাডভেঞ্চার পার্কও ৩১ মার্চ অবধি বন্ধ রাখার ঘোষণা করা হয়েছে। বন্ধ রাখা হচ্ছে পর্বতারোহরণের সমস্ত ধরনের প্রশিক্ষণও। এই অবস্থায় দার্জিলিং এবং কালিম্পং পাহাড়ের বাকি সব পর্যটনকেন্দ্র এবং সমস্ত ধরনের জমায়েত বন্ধ করার চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন জিটিএ কর্তৃপক্ষ। তবে পর্যটন, পরিবহণ, হোম স্টে, হোটেল মালিক সবাইকে নিয়ে বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছেন জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা।
আজ, বুধবার জিটিএ আধিকারিক, প্রশাসনিক কর্তা এবং সংগঠনগুলিকে নিয়ে বিশেষ বৈঠকের ডাক দিয়েছেন অনীত। তিনি জানান, ‘‘পাহাড়বাসীর স্বাস্থ্য, সুরক্ষা সুনিশ্চিত করে রাখতে হবে। তবে সব কিছু বন্ধ করে দিলে তা পাহাড়ের অর্থনীতির উপর বিরাট প্রভাব ফেলবে। তাই সবার সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়, তরাই এলাকায় কোনও ভাবেই যাতে করোনা সংক্রমণ না ছড়ায়, সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।’’
সিকিম এ দিন সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়েছে, ১৫ এপ্রিল অবধি দেশি, বিদেশি কোনও পর্যটক আর ঢুকতে পারবেন না। ক্যাসিনো, জিম, সিনেমা হল, নাইট ক্লাব, ডিস্কো, মেলা, উৎসব ও সভা করার উপরেও নিয়ন্ত্রণ জারি করা হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরেই ধাপে ধাপে সিকিম বিভিন্ন এলাকায় বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ করছিল। বাংলা-সিকিম সীমানায় বাড়ছিল নজরদারি। দার্জিলিং, কালিম্পং পাহাড় নিয়ে কেন একই চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে না, এর ফলে সেই প্রশ্নও উঠছে। দার্জিলিং পাহাড়ে বিদেশিদের আনাগোনা সবচেয়ে বেশি। এখনও কিছু প্রান্তে বিদেশিরা আছেন। জিটিএ এলাকায় বাইরের পর্যটক বা বহিরাগতদের আনাগোনা বন্ধ করা নিয়ে গত কয়েক দিনই ধরেই আলোচনা চলছিল। তার পরেই এদিন অনীত বৈঠক ডাকার কথা বলেন।
জিটিএ চেয়ারম্যান এ দিন আবেদন করেন, পর্যটন ব্যবসায়ীরা যেন অসুস্থ কাউকে পাহাড়ে না আনেন। তিনি জানান, ‘‘পরিবার এবং নিজের স্বাস্থ্য সবার আগে, তার পরে ব্যবসা। আমি সবাইকে বলছি, কারও কোনও অসুবিধা বা শরীরের সমস্যা হলেও চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব সবার। বিভিন্ন সংস্থা বা অফিসে সবার খেয়াল করে চলতে হবে। শীতপ্রবণ পাহাড়ে কোনও সংক্রমণ হলে তা সামাল দেওয়া মুশকিল হয়ে যাবে, তাই একযোগে আমাদের লড়াই করতে হবে।’’
জিটিএ-র নতুন চিন্তাভাবনার কথা চাউর হতেই বহু দেশি-বিদেশি পর্যটক পাহাড় ছাড়তে শুরু করেছেন। কালিম্পঙের এক হোম স্টে ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘আমার পরিবারের সঙ্গে স্কটল্যান্ডের দুই বাসিন্দা ছিলেন। কোথাও ঘোরা আর নিরাপদ নয় বুঝে, আজই তাঁরা বাগডোগরা হয়ে দিল্লিতে ফিরেছেন।’’