আইন হাতিয়ার করে পঞ্চায়েত বাঁচাতে চেষ্টা

দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের প্রলোভন দেখিয়ে শাসক দলে টেনে পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতা দখল করতে পারে তৃণমূল, এই আশঙ্কায় তাঁদেরই দখলে থাকা উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ও হেমতাবাদ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও কালিয়াগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারি সভাপতির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে অনাস্থা এনেছে কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:১২
Share:

দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের প্রলোভন দেখিয়ে শাসক দলে টেনে পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতা দখল করতে পারে তৃণমূল, এই আশঙ্কায় তাঁদেরই দখলে থাকা উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ও হেমতাবাদ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও কালিয়াগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারি সভাপতির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে অনাস্থা এনেছে কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট।

Advertisement

পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী কোনও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বা সহকারি সভাপতির বিরুদ্ধে এক তৃতীয়াংশ সদস্য একবার অনাস্থা আনলে, পরবর্তীতে দেড় বছরের মধ্যে তাঁদের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা যায় না। আগামী দেড় বছরের মধ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হওয়ার কথা। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী সদস্যদের দলে টেনে অনাস্থার মাধ্যমে পঞ্চায়েত সমিতি দখলের ছক ভেস্তে গেলেও এখনই হাল ছাড়ছে না তৃণমূল। গত তিনদিন ধরে জেলা ও ব্লক স্তরের তৃণমূলের একাধিক নেতা তিনটি পঞ্চায়েত সমিতির কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের সদস্যদের কখনও ফোন করে আবার কখনও তাঁদের সঙ্গে দেখা করে শাসকদলে যোগ দেওয়ার অনুরোধ করছেন।

জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, তিনটি পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা উন্নয়নের স্বার্থে প্রায় একমাস আগে তৃণমূলে যোগ দিয়ে সমিতির ক্ষমতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দেওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করেন। সেটা জানতে পেরে ক্ষমতা ধরে রাখতে কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট তাঁদেরকে জোর করে সভাপতি ও সহকারি সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে বাধ্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা হাল ছাড়ছি না, দলের তরফে তিনটি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহকারি সভাপতি সহ বিরোধী দলের সদস্যদের প্রকাশ্যে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে।’’

Advertisement

কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের দাবি, ওই অনাস্থার ভিত্তিতে পরবর্তীতে প্রশাসনের ডাকা তলবিসভায় অনাস্থার পক্ষে থাকা সদস্যরা গড়হাজির থেকে তিনটি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহকারি সভাপতিকে আস্থা প্রমাণের সুযোগ করে দেবেন! জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ ও জেলা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান অপূর্ব পালের পাল্টা দাবি, তিনটি পঞ্চায়েত সমিতির সংখ্যাগরিষ্ঠ বিরোধী সদস্যদের প্রলোভন দেখিয়ে শাসকদলে টেনে পঞ্চায়েত সমিতিগুলি দখলের ছক করেছিল তৃণমূল! সেই ছক ভেস্তে দিতেই পঞ্চায়েত আইনকে হাতিয়ার করে দলের নির্বাচিত সদস্যদের দিয়ে দুটি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও একটি পঞ্চায়েত সমিতির সহকারি সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়েছে! উল্লেখ্য, প্রায় একসপ্তাহ আগে কংগ্রেস পরিচালিত রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি লিয়াকত আলির বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন কংগ্রেসের ৮ ও বামফ্রন্টের ৭ জন সদস্য।

একই দিনে বামফ্রন্ট পরিচালিত কালিয়াগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি আরএসপির রুস্তম আলির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন বামফ্রন্টের ১৪ জন সদস্য। গত শুক্রবার বামফ্রন্ট পরিচালিত হেমতাবাদ পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএমের সভাপতি সৌমিতা রায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন বামফ্রন্টের ১১ জন সদস্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement