দাবি: চলছে ছাত্র বিক্ষোভ। মালদহের গনিখান চৌধুরী ইন্সটিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে। নিজস্ব চিত্র
মালদহের গনিখান চৌধুরী ইন্সটিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির (জিকেসিআইইটি) পড়ুয়াদের অবস্থান বৃহস্পতিবার চতুর্থ দিনে পড়ল। এ দিনও প্রশাসনিক ভবনের সামনে ছাত্রছাত্রীরা বিক্ষোভ দেখান। তবে কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল নেই অভিযোগ তুলে তাঁরা আন্দোলন আরও জোরদার করতে চাইছেন। আন্দোলকারীরা জানিয়েছেন, তাঁদের আন্দোলনের কথা মালদহের বাসিন্দাদের জানাতে তাঁরা সোমবার জেলাসদর ইংরেজবাজার শহরের রথবাড়ি মোড় ও ফোয়ারা মোড়ে দু’টি পথসভা করবেন। বুধবার তাঁরা শহর জুড়ে বড়সড় বিক্ষোভ মিছিলও করবে। তার পরেও যদি কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ না করে তবে জাতীয় সড়ক অবরোধের পথেও হাঁটবেন। শেষ অস্ত্র, অনশন।
প্রতিষ্ঠান সূত্রেই জানা গিয়েছে, ২০১০ সালে মড্যুলার প্যাটার্নে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণে এই জিকেসিআইইটি চালু হয়। সে সময় দু’বছরের ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্স চালু ছিল। তখন নিজস্ব ভবন ছিল না, ভাড়া বাড়িতে কোর্স চালু হয়। ২০১৩ সালে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ নারায়ণপুরে কলেজের নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৪ সালে তত্কালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় কলেজের নতুন ভবনের উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে দু’বছরের বিটেক কোর্সেরও সূচনা করেন। পড়ুয়াদের অভিযোগ, ২০১৬ সালে বিটেক কোর্স শেষ হলে তাঁরা জানতে পারেন যে এই কোর্সটিই অনুমোদনহীন। সে সময় পড়ুয়ারা অনশনে বসেন। প্রতিষ্ঠানের তত্কালীন মেন্টর সংস্থা দুর্গাপুরের এনআইটির বিটেক কোর্সের অ্যাফিলিয়েশন দেওয়ার কথা ছিল বলে দাবি পড়ুয়াদের। কিন্তু অ্যাফিলিয়েশন হয়নি বলে অভিযোগ। সেই জট ছিলই। এ দিকে কয়েক মাস আগে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টর নিয়োগ করা হয় পরমেশ্বর রাও আলাপতিকে। প্রতিষ্ঠান সূত্রে খবর, প্রতিষ্ঠানের জমি নিয়ে বেশ কিছু জট ছিল, সে জন্য বিটেক-এর অ্যাফিলিয়েশন হচ্ছিল না। জমি জট কাটানোর পর সম্প্রতি বিটেকের তিন বছরের কোর্সের অ্যাফিলিয়েশন মেলে। রাজ্যের কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (ম্যাকাউট) সেই অ্যাফিলিয়েশন দিয়েছে। কিন্তু আন্দোলকারী ছাত্রছাত্রীদের দাবি, বিটেক কোর্সের অ্যাফিলিয়েশন দেওয়া হয়েছে সম্পূর্ণ নতুন ভাবে তিন বছরের কোর্সের জন্য। কিন্তু যে পড়ুয়ারা এই প্রতিষ্ঠান থেকে ডিপ্লোমা করছে তাঁদের ভর্তির কোনও ব্যবস্থা হচ্ছে না। পাশাপাশি প্রচুর ছাত্রছাত্রী এই প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করেছে, কিন্তু তারা এখনও সার্টিফিকেট পায়নি। ছাত্ররা জানিয়েছে, এ সব দাবি নিয়ে কিছুদিন আগে তাঁদের একটি প্রতিনিধি দল ম্যাকাউটের রেজিস্ট্রারের সঙ্গে দেখাও করে। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। তাই ফের আন্দোলন শুরু তাঁদের। জিকেআইসিইটি-র ডিরেক্টর পরমেশ্বরবাবু জানিয়েছেন, বিভ্রান্তিকর কিছু অভিযোগ তোলা হচ্ছে। পড়ুয়াদের সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে।