এ বার বনের গভীরে যাওয়ার সুযোগ মিলবে

বনদফতর জানায়, ইতিমধ্যে বেশ কিছু আবেদন জমা পড়েছে। সব রকম পরিচয়পত্র দিয়ে আবেদন করার পরেও কোনও পর্যটকের পুলিশের খাতায় কোনও মামলা থাকলে, তিনি আবেদন করতে পারবেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মাদারিহাট শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৭ ১৬:৩৫
Share:

জাতীয় উদ্যান সহ বিভিন্ন জঙ্গলের গভীর এলাকায় বন্যপ্রাণীদের নাগালে পৌঁছতে নতুন প্রকল্প আনল রাজ্য বন দফতর। পর্যটকদের জন্য বন্যপ্রাণসাথী বা বনবান্ধব নামে একটি প্রকল্প চালু করল বন দফতর। এই প্রকল্পের জন্যে প্রকৃত বন্যপ্রাণপ্রেমী পর্যটকরা অনলাইনে আবেদন করতে পারেন। আবেদন পত্র খুঁটিয়ে দেখা ও সরাসরি জিজ্ঞাসাবাদে বনকর্তারা সন্তুষ্ট হলে তবেই মিলবে বন্যপ্রাণসাথী প্রকল্পে সঙ্গী হওয়ার অনুমোদন।

Advertisement

বনদফতর জানায়, ইতিমধ্যে বেশ কিছু আবেদন জমা পড়েছে। সব রকম পরিচয়পত্র দিয়ে আবেদন করার পরেও কোনও পর্যটকের পুলিশের খাতায় কোনও মামলা থাকলে, তিনি আবেদন করতে পারবেন না।

অনুমোদন পেলে পর্যটকদের রাজ্যের যে কোনও জঙ্গলের প্রত্যন্ত বিট অফিস বা নজরমিনারে চলবে বনকর্মিদের সঙ্গে টানা সাত দিনের হাতির পিঠে চরার আদব কায়দা, জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যাওয়া, বা দুর্গম এলাকায় লাঞ্চে চরে নজর চালানো মতো কঠোর প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণের পরে টানা সাত দিন রাজ্যের যে কোনও জঙ্গলের কোর এলাকায় বনকর্মিদের সঙ্গে জঙ্গল পাহারা দেওয়া ও বন্যপ্রাণীদের সংরক্ষণের নজরদারি। এতে পর্যটকরা হাতের নাগালে প্রাণ ভরে হাতি, গন্ডার, বাঘ দেখার সুযোগ পাবেন। রাতে থাকতেও হবে গভীর জঙ্গলের কোনও নজরমিনারে। এই ক’দিনের জন্য পর্যটকদের নিজের খাওয়া, নিজেদেরই রান্না করে জঙ্গলেই খেতে হবে।

Advertisement

এই প্রকল্পে সুযোগ পেতে হলে হতে প্রতি পর্যটক পিছু গুণতে হবে পনেরো হাজার টাকা। বন দফতরের পক্ষ থেকে জঙ্গলে নজর ও দিক নির্ণয়ের জন্য পর্যটকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে অত্যাধুনিক গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম ডিভাইস ও বাইনোকুলার।

জঙ্গলে থাকাকালীন প্রতিদিনের অভিজ্ঞতা তাঁরা বনদফতরের দেওয়া ডায়রিতে লিখে রাখবেন। পরে বনদফতর সেই ডায়রি নিয়ে নিলেও একটি করে কপি পর্যটকদের দিয়ে দেবেন।

আরও খবর
‘কাপ’ই নতুন বন্ধু এ রাজ্যের মেয়েদের

বন্যপ্রাণ বিভাগের উত্তরবঙ্গের বনপাল সুমিতা ঘটক জানিয়েছেন, “বন্যপ্রাণসাথী প্রকল্পে যাঁরা আসবেন, তাঁদের মধ্যে অনেককে ভবিষ্যতে বনদফতরের দূত হিসাবে নিয়োগ করা হবে। তাঁদের মাধ্যমেই ব নদফতরের কর্মিরা রোদ-জলে ভিজে সীমিত পরিকাঠামোয় কী ভাবে বন্যপ্রাণ ও বন রক্ষায় সর্বদা সজাগ থাকেন, তা প্রচারের কাজে লাগবে। তিনি বলেন, ‘‘তবে, কোনও পর্যটক যদি মনে করেন, বন্যপ্রাণসাথী প্রকল্পে সুযোগ পেয়ে নিশ্চিতে জঙ্গলে ঘুরবেন, আরামে আয়াসে নজরমিনারে রাত কাটাবেন, তা হলে আমি বলব তাঁদের এই প্রকল্পে না আসাই ভাল। আমরা চাই যারা এই প্রকল্পে সুযোগ পেয়ে জঙ্গলে থাকবেন, তাঁদের সুচিন্তিত মতামত বনদফতর বনের কাজেই লাগাবে।”

বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “এত দিন পর্যটকরা আক্ষেপ করতেন, জঙ্গলে ভ্রমণে গেলেও সে ভাবে বন্যপ্রাণির দেখা পান না। সেই আক্ষেপ দূর করতেই বন্যপ্রাণসাথী প্রকল্প চালু করা হল। বন্যপ্রাণসাথী প্রকল্প চালু হওয়ায় সুযোগ পাওয়া পর্যটকরা সরাসরি বন্যপ্রাণী দেখাটা হাতের নাগালে পেয়ে যাবেন। বনকর্মিদের সঙ্গে পর্যটকদের মতো বিনিময়ের একটা নতুন বাতারবণ তৈরি হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement