ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিটি আসনে প্রার্থী খুঁজতে ঘুম ছুটেছে মালদহ জেলা বিজেপি নেতাদের। সোমবার থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব। প্রার্থী তালিকা ঘোষণা দূরের কথা, প্রার্থী হতে চেয়ে পর্যাপ্ত আবেদনপত্রই জমা পড়েনি বিজেপির সদর দফতরে। এমনকী, ব্লক স্তরের নেতারা পঞ্চায়েতের প্রার্থী জোগাড় করতে কর্মীদের বাড়ি বাড়ি ছুটছেন। এরজন্য জেলা স্তরের নেতাদেরই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন বিজেপির নিচুতলার কর্মীরা।
তাঁদের দাবি, জেলাতে বরাবরই বিজেপির ভোট ব্যাঙ্ক রয়েছে। অথচ নেতারা প্রতি বুথে কমিটি তৈরি করতে পারেননি। যার জন্য পঞ্চায়েতে প্রার্থী খুঁজতে নাজেহাল হতে হচ্ছে। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সঠিক সময়ে আমাদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হবে। বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় আমাদের ভালো ফল হয়েছে। এ বারও রাজ্যের মধ্যে মালদহে ভালো ফল করবে বিজেপি।”
৯ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে মনোনয়ন পত্র তোলা ও জমা দেওয়ার কাজ। আর মাত্র সাতদিন সময় রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির হাতে। তৃণমূল, কংগ্রেস ও বামেরা প্রার্থী বাছতে ব্যস্ত। তবে প্রার্থী বাছতে গিয়ে বেশ মুশকিলে বিজেপি। জেলায় মোট ২৬৪৬টি বুথ রয়েছে। তারমধ্যে ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহ পুরসভা এলাকার বুথগুলি বাদ দিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন হচ্ছে ২৪৫১টি বুথে। এখনও পর্যন্ত সমস্ত বুথে কমিটি গড়তে পাড়েনি বিজেপি।, এখন পর্যন্ত ১৯৫০টি বুথে কমিটি গঠন হয়েছে। ফলে ছ’শো বুথে কমিটি নেই বিজেপির। যার প্রভাব পড়ছে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে। বিজেপির এক জেলা নেতার কথায়, “জেলা পরিষদে ৩৮টি আসন রয়েছে। প্রতিটি থেকে তিনজন করে প্রার্থীর নাম চাওয়া হয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত মোট ১৪টি নাম পেয়েছি আমরা। তাই ব্লকের নেতাদের তড়িঘড়ি বাকি নাম পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের একটিও আসনেও জিততে পারেননি বিজেপির প্রার্থীরা। তবে ৪২৩টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনের মধ্যে মাত্র ১৮টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। ফলে গ্রাম পঞ্চায়েত মিলিয়ে মোট ৮৪ জন প্রতিনিধি ছিল দলের। দলবদলের পর এখন রয়েছে ৭১টি। তবে এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেসের সমঝোতায় ১২টি আসনেই ভরাডুবি হয়েছিল তৃণমূলের। ঘাসফুল না ফুটলেও বৈষ্ণবনগর বিধানসভাটি বাম-কংগ্রেস প্রার্থীকে হারিয়ে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপির স্বাধীন সরকার। এ ছাড়া জেলায় ভোটের হার ছিল ২০ শতাংশ। ফলে এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে মালদহের ফল নিয়ে আশাবাদী রাজ্য নেতৃত্ব। রাজ্যের বহু নেতা নিয়ম করে জেলা সফরে আসছেন। তবে এখনও প্রার্থী জোগাড় না হওয়ায় হতাশ দলের নেতা থেকে শুরু করে কর্মীরা। বিজেপির জেলা সভাপতি সুব্রত কুণ্ডু বলেন, “মালদহে সর্বশক্তি দিয়ে একক ভাবে লড়াই করবে বিজেপি।”