প্রত্যয়ী: স্কুলে যাচ্ছে বিউটি খাতুন। নিজস্ব চিত্র।
চার দিন ঘরবন্দি থাকার পর বুধবার স্কুলে গিয়েছিল বিউটি খাতুন। বাড়ি থেকে মূল সড়ক পর্যন্ত তাকে এগিয়ে দিয়ে আসে তার মা ঝাঁসি বিবি। ছুটির পর স্কুলের শিক্ষিকা প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেন তাকে। কিন্তু এ ভাবে কতদিন স্কুলে যাবে বিউটি? প্রশ্ন উঠেছে তার পরিবারেই।
আর এর উত্তর খুঁজতেই বুধবার গোটা নাদাবপাড়া ও সব্জিপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের এক করে বিউটির সুরক্ষার উদ্যোগ নিল মালদহ জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি (সিডব্লিউসি)। এ দিন বিকেলে নাদাবপাড়ায় বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সিডব্লিউসির চেয়ারপার্সন চৈতালী ঘোষ সরকার। ছিলেন কমিটির সদস্য চৈতালী ঝা, জেলা সুরক্ষা আধিকারিক শিবেন্দুশেখর জানা, মিলকি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আনসারুল হক। বৈঠকের পাশাপাশি গ্রামবাসীদের নিয়ে একটি সুরক্ষা কমিটিও গঠন করা হয়।
চৈতালীদেবী বলেন,‘‘বিউটিকে যে তিন যুবক উত্যক্ত করছে তারা যেহেতু এলাকারই বাসিন্দা সে কারণে এলাকার সমস্ত মানুষ এক হয়ে যাতে বিউটির সুরক্ষার দায়িত্ব নেয়, সেই উদ্যোগই আমরা নিলাম। পুলিশও নজর রাখবে। ওই যুবকদের বোঝানো হবে, তাতেও না হলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’
এলাকার বাসিন্দা আতাউল নাদাব, আকতার মোমিন, আনসার নাদাবরা বলেন, ‘‘আমরাই এখন এক হয়ে বিউটির সুরক্ষার ব্যবস্থা করব। যাঁরা উত্যক্ত করছিল তাঁদের বোঝাবো।’’
নাদাবপাড়া গ্রামের বছর ষোলোর কিশোরী এ দিন অভিযোগ করে, সপ্তাহখানেক ধরে নাদাবপাড়া ও সব্জিপাড়ার তিন যুবক স্কুলে যাওয়ার পথে তাঁকে উত্যক্ত করছিল। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়ায় যে বৃহস্পতিবারের পর থেকে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিতে হয়। সিডব্লিউসির চেয়ারম্যান ও মিল্কি ফাঁড়ির পুলিশের আশ্বাসে এ দিন ফের স্কুলে গিয়েছিল বিউটি।
জানুয়ারি মাসের ১৭ তারিখ নাদাবপাড়া গ্রামে বিয়ের নিমন্ত্রণ খেতে গিয়ে নাবালিকার বিয়ের প্রতিবাদ করেছিল অমৃতির নিবেদিতা বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রী।
এর জেরে বিউটিকে মারধরের অভিযোগ ওঠে গ্রামেরই এক মোড়লের পরিবারের ৬ জনের বিরুদ্ধে। এরপরেই তার প্রতিবাদী সত্ত্বাকে কুর্নিশ জানিয়ে মালদহ জেলা প্রশাসন নাবালিকা বিয়ে বন্ধের প্রচারে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডারও করে তাকে।