ফাইল চিত্র
রাতের আলিপুরদুয়ার শহরের নিরাপত্তা নিয়ে অনেকদিন থেকেই প্রশ্ন উঠছিল। এবার এই শহরকে ব্যবহার করে গরু পাচার চক্রের সক্রিয়তারও অভিযোগ উঠল।
শনিবার গভীর রাতে পাচার হওয়ার সময় সুভাষপল্লি এলাকায় চারটি গাড়ি আটক করে স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগ, ওই গাড়িগুলিতে গরু পাচার হচ্ছিল। পরে পুলিশ ৭০টি গরু-সমেত গাড়িগুলি আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তবে ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, এই শহর দিয়ে গরু পাচার হয় না। তবে এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখা হবে।
গত অক্টোবরে শহরের বক্সা ফিডার রোডে দু’টি দোকানে দুঃসাহসিক মোবাইল ফোন চুরির ঘটনা ঘটে। পুলিশের দাবি, যার জেরে শহরের নিরাপত্তা আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, যাবতীয় এই নিরাপত্তা বেড়েছে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কয়েকটি এলাকায়। শহরের বাকি এলাকার পরিস্থিতি একই রয়ে গিয়েছে। গত বুধবারই নিউ আলিপুরদুয়ারে দু’টি বাড়ি ও একটি দোকানে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে মারধরের অভিযোগ ওঠে একদল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। আর এবার রাতের শহরের ঢিলেঢালা নিরাপত্তার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শহরের উপর দিয়ে গরু পাচারের অভিযোগও উঠল।
শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ, প্রায় প্রতি রাতেই আলিপুরদুয়ার শহরকে করিডর হিসাবে ব্যবহার করে নানা চক্র গরু পাচার করছে। অথচ, সব জেনেও পুলিশ কার্যত নিশ্চুপ। শনিবার রাতেও শহরের উপর দিয়ে একাধিক গাড়িতে গরু-বোঝাই করে সেগুলি পাচার চলছিল বলে অভিযোগ। শহরের সুভাষপল্লি এলাকায় একটি গাড়ির চাকা খুলে যায়। গাড়িগুলি দেখে স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা গাড়িটি আটকান। ওই গাড়ির পেছনে দাঁড়িয়ে পড়ে আরও তিনটি গাড়ি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতিটি গাড়িতেই গাদাগাদি করে গরু নিয়ে পাচার হচ্ছিল।
খবর পেয়ে আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। যান পুলিশকর্তারাও। স্থানীয় বাসিন্দা গৌরব পাল বলেন, ‘‘গরু পাচার রুখতে পুলিশের কোনও ভূমিকাই নেই। উল্টে আমরা শনিবার রাতে গরু পাচার রুখে দেওয়ায় এক পুলিশকর্তা আমাদেরই গ্রেফতারের হুমকি দেন।’’
তবে জেলা পুলিশের কর্তারা জানান, শনিবার কাউকে কোন হুমকি দেওয়া হয়নি। তাঁদের কথায়, গরু পাচারকারীরা যাতে আলিপুরদুয়ারকে ব্যবহার করতে না পারে, সেজন্য প্রতি রাতেই শহর জুড়ে কড়া নজরদারির ব্যবস্থা রয়েছে।
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘ এ শহর দিয়ে গরু পাচার হয় না। তবু কোথায় ওই গরুগুলি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনায় জড়িতদের খোঁজ চলছে।’’