ঘোষণা: জেলার মণ্ডল সভাপতিদের নাম ঘোষণা করা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র
লোকসভা নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয়ের পরেও আলিপুরদুয়ার জেলার ৪৩টি বুথে মঙ্গলবার পর্যন্ত কোনও কমিটি গড়তে পারল না বিজেপি। এই ৪৩টি বুথের বেশিরভাগই চা বাগান এলাকায়। পাশাপাশি জেলায় সদস্যপদ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ না হওয়ায় বিভিন্ন স্তরের নেতাদের নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে জেলা বিজেপির অন্দরে। বিজেপির জেলা শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য সদস্যপদ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার কথা মানতে নারাজ। তবে ৪৩টি বুথে কমিটি গঠন করতে না পারায় সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা মেনে নিয়েছেন তাঁরা।
আলিপুরদুয়ার জেলায় চা বাগানকে পাখির চোখ করেই কয়েক বছর আগে সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধি শুরু করেছিলেন বিজেপির জেলা ও রাজ্য নেতারা। তারই ফল স্বরূপ ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে মাদারিহাট আসনে জয় ছিনিয়ে নেয় পদ্ম শিবির। একই পদ্ধতিতে তার পরও সংগঠনের শক্তিবৃদ্ধির চেষ্টা চালিয়ে যান বিজেপির নেতারা। যার জেরে গত লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটের ব্যবধানে তৃণমূলকে হারিয়ে দেন তাঁরা। এই অবস্থায় একুশের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের দিকে নজর রেখে লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় বিজেপির অন্দরে।
সেই লক্ষ্যেই গত সেপ্টেম্বরে নতুন করে বুথ কমিটি গঠন শুরু হয়। সূত্রের খবর, ওই মাসে জেলায় ১২৭৪টি বুথের মধ্যে ১২৩১টি বুথে কমিটি গঠন করেন বিজেপি নেতারা। কিন্তু বাকিগুলো করা যায়নি। এর পর চলতি মাসে হয় মণ্ডল কমিটির সভাপতি নির্বাচন। মঙ্গলবার দলের তরফে ২২টি মণ্ডলের সভাপতিদের নাম ঘোষণাও করা হয়। কিন্তু খোদ বিজেপি সূত্রের খবর, দলের মণ্ডল কমিটির সভাপতিদের নাম ঘোষণা হয়ে গেলেও, গত তিন মাস ধরে চেষ্টা চালিয়েও বাকি ৪৩টি বুথে কমিটি গঠন করা যায়নি। যে বুথগুলির বেশিরভাগই চা বাগান অধ্যুষিত এলাকায় বলে খোদ বিজেপি সূত্রের খবর। বিজেপি নেতাদের কেউ কেউ এ জন্য ‘সন্ত্রাস’কে দায়ী করার চেষ্টা করলেও, বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘‘সাংগঠনিক দুর্বলতার জন্য কিছু বুথে কমিটি গঠন বাকি রয়েছে। দ্রুত সেই কমিটি গঠনের চেষ্টা চলছে।’’
গত জুন থেকে দেশের বাকি জায়গার সঙ্গে আলিপুরদুয়ারেও সদস্যপদ সংগ্রহ অভিযানে নামেন বিজেপি নেতারা। বিজেপি সূত্রের খবর, এ বার জেলায় দলের নেতাদের তিন লক্ষ সদস্যপদ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে সদস্যপদ সংগ্রহ হয়েছে পৌনে তিন লক্ষ। যদিও বিজেপির জেলা সভাপতির দাবি, ‘‘অন লাইনে সদস্যপদের হিসেব যোগ করলে দেখা যাবে তা তিন লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে।’’
এ দিন বিজেপির ২২টি মণ্ডলের নতুন সভাপতিদের নাম ঘোষণা করেন। যাতে দেখা যায়, আটটি মণ্ডলে সভাপতি পরিবর্তন করা হয়েছে।