ব্রিটিশ শাসনের শৈশবের সাক্ষী সাড়ে তিনশো একর জুড়ে ছড়িয়ে থাকা অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ মতিঝিল। ভাগীরথীর এই পুরনো খাতে নবাবি আমলে এখানে মুক্তা চাষ হত, তাই এমন নাম। এই মতিঝিল থেকেই পলাশির দিকে রওনা দিয়েছিলেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা। মতিঝিলের প্রাসাদেই লর্ড ক্লাইভ মুঘল সম্রাটের থেকে বাংলা, বিহার, ওড়িশার দেওয়ানি পান। ব্রিটিশ আমলের প্রকৃত সূচনা হয়। পরে ওয়ারেন হেস্টিংসও এখানে থাকতেন।
২০১৩ সালে মতিঝিলে পর্যটন কেন্দ্রের শিলান্যাস করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৩০ জুন তাঁর সেটির উদ্বোধন করতে আসার কথা। শনিবার মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘এখানেই নবনির্মিত কটেজে রাতে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী।’’
এ দিন ব্যাপক বৃষ্টির মধ্যে বহু কষ্টে মতিঝিলে পৌঁছে দেখা গেল, প্রচুর কর্মী কেউ ভিজে কেউ ছাতা মাথায় শেষ পর্যায়ের কাজে ব্যস্ত। সোজা এগোলে পর্যটকদের থাকার ছ’টি কটেজ। তৈরি হচ্ছে বিশেষ অতিথিদের রাতের থাকার আবাস। পাশেই রেস্তোরাঁর কাজ প্রাথমিক পর্যায়ে। উদ্যানের মাঝে তিনটি ৫০ ফুটের বাতিস্তম্ভ, তাতে ১২টি করে এলইডি আলো। গোটা জলাশয় ছোট বাতিস্তম্ভ দিয়ে ঘেরা। জলাশয়ে লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের ব্যবস্থা।
আসবেন কী করে?
মুর্শিদাবাদ স্টেশনে নেমে আগের মতো ঘোড়ার গাড়ি আর মেলে না। হাজির টুকটুক বা টোটো। শহরের এক প্রান্তে উদ্যানটি অবস্থিত, তাই যোগযোগ ব্যবস্থা ভাল নয়। টোটো চালক রাজীব খান বলেন, ‘‘বৃষ্টির সময় সমস্যা বেশি। শীতে কিছুটা ভাল হবে। তবে রাতের রাস্তায় আলো নেই। যাঁদের নিজেদের গাড়ি আছে তাঁদের কথা আলাদা।’’ গাড়িতে এলে বহরমপুর থেকে গঙ্গার ধার হয়ে রাস্তা, তা না হলে পঞ্চাননতলা হয়ে লালবাগ বাসস্ট্যান্ড হয়ে মতিঝিল।