দফতরে ঢোকা নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব

শান্তিপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে ওঠায় দলীয় দফতরে ঢোকার ব্যাপারে যুযুধান দুই গোষ্ঠীর এক পক্ষের কর্মীরা বাধা পাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এত দিন বাধাপ্রাপ্তদের ক্ষোভ নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।

Advertisement

সম্রাট চন্দ

শান্তিপুর শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৯ ০২:০৫
Share:

দলীয় কার্যালয়ে দলেরই একাংশ ঢুকতে পারছে না!

Advertisement

শান্তিপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে ওঠায় দলীয় দফতরে ঢোকার ব্যাপারে যুযুধান দুই গোষ্ঠীর এক পক্ষের কর্মীরা বাধা পাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এত দিন বাধাপ্রাপ্তদের ক্ষোভ নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু তিন দিন আগে নদিয়ায় বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত অনুব্রত মণ্ডলের উপস্থিতিতে তা সর্বসমক্ষে এসে পড়ে। দলীয় সূত্রের খবর, ভোটের মুখে দলীয় নেতৃত্ব একে দ্রুত মেটানোর জন্য মরিয়া।

গত ৭ মার্চ হবিবপুরে দলের কর্মী সভায় শান্তিপুরে মূলত পুরপ্রধান অজয় দে শিবিরের কিছু কর্মী অনুব্রতর সামনেই অভিযোগ তোলেন, দলীয় কার্যালয়ে তাঁরা ঢুকতে পারছেন না। তাঁদের ইঙ্গিত ছিল বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যের শিবিরের তৃণমূল কর্মীদের দিকে। মঞ্চে তখন অন্য নেতাদের সঙ্গে শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ও পুরপ্রধান অজয় দে— দু’জনেই উপস্থিত। পরে বক্তৃতা দিতে উঠে জেলা তৃণমূলের অন্যতম কার্যকরী সভাপতি তথা বিধায়ক শঙ্কর সিংহ-ও দলের কর্মীদের দফতরে ঢুকতে না-পারার বিষয়টি তোলেন। পরে অনুব্রত মণ্ডল শান্তিপুর নিয়ে জেলা নেতৃত্বকে বৈঠকে বসতে বলেন।

Advertisement

শান্তিপুরে অরিন্দম-অজয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব সুবিদিত। প্রথম থেকেই নানা বিষয় নিয়েও দুই শিবিরের দূরত্ব রয়ে গিয়েছে। অবশ্য অজয় দে বলেন, ‘‘আমি দলের অনুগত সৈনিক। এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’’ আর অরিন্দমের কথায়, ‘‘দলের দফতর সকলের জন্যই খোলা। কাউকে বাধা দেওয়া হয় না। যাঁরা বাধা পাওয়ার অভিযোগ করছেন তাঁরা এক দিন সময় ঠিক করে আমার কাছে এসে বলুন। আমি নিজে তাঁদের নিয়ে যাব।” বিবাদ মেটাতে অরিন্দম ও অজয় বৈঠকে বসবেন কিনা জানতে চাইলে অজয় কিছু বলতে চাননি। অরিন্দমের বক্তব্য, ‘‘যা করব দলের নির্দেশ মেনেই করব।’’

শান্তিপুরের একেবারে কেন্দ্রে পাবলিক লাইব্রেরির কাছে ওই দফতর পরিচিত ছিল শান্তিপুরের ‘কংগ্রেস ভবন’ নামে। ২০১৩ সালের শেষের দিকে পুরপ্রধান অজয় দে কাউন্সিলারদের নিয়ে যোগ দেন তৃণমূলে। তখনই এই দফতর হয়ে যায় ‘তৃণমূল কংগ্রেস ভবন’। বিধানসভা ভোটে অরিন্দম ভট্টাচার্য কংগ্রেস প্রার্থী হন। ভোটে জেতার পরে তিনি অবশ্য তৃণমূলে যোগ দেন। তার পর থেকেই অজয় দে-র সঙ্গে তাঁর বিরোধ শুরু হয়।

এর মধ্যে দলের শহর সভাপতির বদল হয়েছে। অজয় দে-ঘনিষ্ঠ উপ পুরপ্রধান আব্দুস সালাম কারিগরকে সরিয়ে শহর সভাপতির পদে বসেছেন অরিন্দম- ঘনিষ্ঠ অরবিন্দ মৈত্র। দ্রুত দলের ২৪টি ওয়ার্ডে সভাপতি পদেও বদল আনা হয়। দফতরের চাবি চলে যায় বিধায়ক-ঘনিষ্ঠদের হাতে। অজয় শিবিরের একাংশের দাবি, তাঁদের প্রতি বিদ্বেষমূলক আচরণ করছে অরিন্দম-ঘনিষ্ঠেরা। অভিযোগ করেছেন, দফতরে ঢুকতে দেওয়া হয় না তাঁদের। অন্য দিকে, বিধায়ক-শিবিরের দাবি, দফতরে আসতে কাউকে বাধা দেওয়া হয় না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement