—প্রতীকী চিত্র।
সংখ্যাগরিষ্ঠ বিজেপির ঘর ভাঙিয়েও শেষরক্ষা করতে পারল না তৃণমূল। বুধবার ভোটাভুটিতে বিজেপির রক্ষাকর্তা হয়ে দাঁড়াল সিপিএম এবং আইএসএফ।
মঙ্গলবার কৃষ্ণনগর ১ ব্লকেরই রুইপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতে এখানেও সিপিএম ও বিজেপি একসঙ্গে মিলে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ সদস্যকে প্রধান করে। সংখ্যাগরিষ্ট হয়েও তৃণমূল বোর্ড গঠন করতে ব্যার্থ হয়। ভীমপুরে তার বদলা প্রায় নিয়েই ফেলেছিল তৃণমূল। কিন্তু ফারাক গড়ে দিল সিপিএমের অবস্থানই।
ভীমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত আগে বিজেপির দখলেই ছিল। এ বারও তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। মোট ২৭টি আসনের মধ্যে বিজেপি জেতে ১৪টি আসনে। তৃণমূল পায় ন’টি, নির্দল দু’টি, সিপিএম ও আইএসএফ পায় একটি করে আসন। কিন্তু এ দিন বোর্ড গঠনের সময় পরিস্থিতি আচমকা বদলে যায়। বিজেপির দু’জন সদস্য তৃণমূলকে সমর্থন করে বসেন। সেই সঙ্গে দুই নির্দল সদস্যও তৃণমূলকে সমর্থন করেন। ওই দুই নির্দল সদস্য আবার ‘বিক্ষুব্ধ বিজেপি’ বলে পরিচিত। তাঁদের এলাকায় দলের প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় তাঁরা নির্দল হিসাবে দাঁড়িয়েছিলেন। ফলে তৃণমূলের পক্ষে সদস্য থাকেন ১৩ জন আর বিজেপির ১২ জন।
এই পরিস্থিতিতে সিপিএম এবং আইএসএফ সদস্যদের ভোট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। পঞ্চায়েতের ভিতরে ও বাইরে প্রবল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। শেষমেশ সিপিএম ও আইএসএফ সদস্য বিজেপিকে ভোট দিলে বিজেপি শিবির ১৪ সদস্য নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পান। প্রধান নির্বাচিত হন বিজেপির পুজা দাস মণ্ডল, উপপ্রধান হন সিপিএমের বাপ্পাদিত্য বিশ্বাস। এই ঘটনায় ফের বিজেপি ও সিপিএমের গোপন আঁতাঁতের অভিযোগে সরব হয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের নদিয়া জেলা মুখপাত্র দেবাশিস রায়ের দাবি, “বার বার রাম ও বামের আঁতাঁত মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। রুইপুকুরের পর ভীমপুরেও একই ঘটনা ঘটল। লোকসভা ভোটে মানুষ এদের উচিত শিক্ষা দেবে।”
ভীমপুরের ঘটনায় অস্বস্তিতে সিপিএম নেতৃত্বও। দলের নদিয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুমিত বিশ্বাস বলেন, “ভীমপুরের আমাদের যে সদস্য বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন, তিনি আমাদের দলীয় সদস্য নন। তাঁর সঙ্গে দলের সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে। কারণ বিজেপি ও তৃণমূলের সঙ্গে সমদূরত্ব রক্ষা করাই
দলের সিদ্ধান্ত।”
বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস আবার দাবি করেন, “সিপিএমের ওই সদস্য আমাদের দলে যোগদান করবেন এই শর্তেই আমরা তাঁর সমর্থন নিয়েছি। সিপিএম দলের সমর্থন আমরা নিইনি।”
যদিও উপপ্রধান নির্বাচিত বাপ্পাদিত্য বলেন,“আমি বিজেপিতে যোগ দিইনি, সিপিএমেই আছি।” তাঁর ব্যাখ্যা, “অর্জুন বিশ্বাস আমার নেতা নন। তাই তিনি কী বললেন তার উত্তর আমি দেব না। আমি শুধু তৃণমূলকে রুখতে মানুষের দাবি মেনে বিজেপিকে ভোট দিয়েছি।”