তৃপ্তি: স্কুলের হেঁশেলে দুপুরে পাত। নিজস্ব চিত্র
বছর চারেক আগেও ছবিটা ছিল অন্য রকম।
পড়ুয়ারা মিড-ডে মিল খেত খোলা আকাশের নীচে। খাওয়ার সময়ে আশপাশে ঘুরে বেড়াত গরু-কুকুর।
আর এখন?
সেই হতশ্রী ছবিটা বিলকুল উধাও। তৈরি হয়েছে খাওয়ার ঘর, কাউন্টার। রয়েছে টেবিল-বেঞ্চ। সেখানে পা দুলিয়ে তৃপ্তি করে খাচ্ছে পড়ুয়ারা। লালগোলার লস্করপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গির আলম জানান, বিভিন্ন খাতের টাকা বাঁচিয়ে এমন ব্যবস্থা করা গিয়েছে। মিড-ডে মিলের তিনটে ঘরে এক সঙ্গে সাড়ে চারশো থেকে পাঁচশো জন বসে খেতে পারে।
বালুটুঙি হাই স্কুল, এমএন অ্যাকাডেমি, রহমতুল্লাহ হাই মাদ্রাসা, পণ্ডিতপুর সিনিয়র মাদ্রাসা, হোসেনাবাদ হাই স্কুলেও পড়ুয়ারাও এখন চেয়ার টেবিলে মিড-ডে মিল খাচ্ছে। হিকমপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় জানান, তাঁদের স্কুলেও এক সঙ্গে দু’শো জন বসে খাবার খেতে পারে। দেওয়ালে ও সিমেন্টের খুঁটিতে সাঁটানো রয়েছে ফ্লেক্স। ফল ও সব্জির ছবি দিয়ে তার খাদ্যগুণ, ইংরেজি-বাংলা নামকরণ, কী খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে—সব লেখা রয়েছে সেখানে।
স্কুলেরই একফালি জমিতে শাক-সব্জি লাগানো হয়েছে। পড়ুয়া ঠিক মতো হাত ধুয়ে নেয় সে ব্যাপারেও নজর রাখেন শিক্ষকেরা। রান্না ও খাবার সরবরাহ করার সময় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের বাধ্যতামূলক ভাবে অ্যাপ্রন পরতে হয়।
বদল ঘটেছে বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও। লালবাগের কুতুবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহামুদাল হাসান জানান, মুর্শিদাবাদ পুরসভা ২০১২ সালে এক সঙ্গে ৫০ জন বসে খাওয়ার মতো ঘর তৈরি করে দেয়। বেলডাঙা চক্রের ন-পুকুরিয়া, সারগাছি চক্রের সুতিঘাটা, জলঙ্গি চক্রের কান্দিপাড়া, ভরতপুর চক্রের মিল্কিপাড়া প্রাথমিক স্কুলগুলিতেও মিড-ডে মিলে অনেক পরিবর্তন এসেছে। তৈরি করা হয়েছে মিড-ডে মিল খাওয়ার ঘরও।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পূরবী দে বিশ্বাস বলেন, ‘‘জেলায় এমন শতাধিক স্কুল রয়েছে যেখানে গেলেই চমকে উঠতে হয়। কী ভাল ব্যবস্থা! বাকি স্কুলগুলোতেও ওই পরিবেশ গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।’’