ইদ্রিস আলি।
বিধায়ক ইদ্রিস আলির মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ভগবানগোলায়। সেখান থেকে অনেকেই শুক্রবার কলকাতায় যান প্রয়াত বিধায়ক শেষ দেখা দেখার জন্য।
শেষ বিধানসভা ভোটে ভগবানগোলায় যখন ইদ্রিস আলিকে প্রার্থী করা হয়, তখন তৃণমূলের ভিতরেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। ‘বহিরাগত’ ইদ্রিসকে মেনে নিতে পারেননি শাসক দলের অনেকেই। তবে সেই সব ক্ষোভ দূর করে ইদ্রিস বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করেন। দলে তাঁকে নিয়ে বেশ ভাল বিতর্ক ছিল। নানা অভিযোগ তিনি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধেও উঠেছে। বিএসএফের বিরুদ্ধে তিনি বার বার অভিযোগ তুলেছিলেন।
তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে প্রাক্তন বিধায়ক তৃণমূলের আবু সুফিয়ান সরকার কলকাতায় ছুটে যান সাত সকালেই। তিনি বলছেন, “আমরা তাঁকে জিতিয়েছিলাম। এই মৃত্যুতে স্বভাবতই তৃণমূল কর্মী মাত্রই কষ্ট পাবেন। তবে কর্মীদের কাছে ব্যক্তির চেয়ে দলই বড়।”
ভগবানগোলা ১ ব্লকের তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন প্রামাণিক। তাঁর বাবা এক সময় তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘উনি সাংগঠনিক পদে ছিলেন না। প্রশাসনিক পদে ছিলেন। তাই সাংগঠনিক ভাবে দলের কোনও ক্ষতি হবে না। তবে পরিবারের কোনও লোকের মৃত্যু হলে অভাব মনে হবে। কিন্তু দলের ভিত শক্তিশালী। তা কাটিয়ে উঠতে সমস্যা হবে না দলের কর্মীদের।”
ভগবানগোলা ২ ব্লকের সভাপতি আব্দুর রউফের বিরুদ্ধে এক সময় ইদ্রিস আলি মুখ খুলেছিলেন। তবু খবর পেয়েই তিনিও ছুটেছিলেন কলকাতায় শেষ যাত্রায় সামিল হতে। তিনি বলেন, “দল ভগবানগোলায় যথেষ্ট শক্তিশালী। সব মৃত্যুই দুঃখজনক। কিন্তু এক জনের মৃত্যুতে দলে কোনও সঙ্কট তৈরি হবে না। যখনই উপনির্বাচন হোক ভাল ফল করবে ভগবানগোলা।”
ইদ্রিশ আলির মৃত্যুতে কলকাতায় তার বাড়িতে গিয়েছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক চাঁদ মহম্মদও। একসময় বামপন্থী দলে থাকলেও পরে যোগ দেন তৃণমূলে। তিনি বলেন, “দলের টিকিট না পেলেও আমরা ইদ্রিস আলির জন্য যথেষ্ট লড়াই করেছি। কর্মীদের পরিশ্রমের ফসল বিপুল ব্যবধানে তাঁর জয়। যখন একজন সাংসদ বা বিধায়ক সরে যান তখন তার জায়গা পূরণ করা সবসময় সম্ভব নয়। তিনি প্রবীণ রাজনীতিক ছিলেন। তবে সকলের কাছেই যে ভাল হবেন তা নয়। দলকে ভালবাসতেন। আমার সঙ্গে ভাল সম্পর্ক ছিল। মাঝে মধ্যে ফোনে কথাও হত। আমার পছন্দের মানুষ ছিলেন।”
এক সময় জেলা তৃণমূলের সম্পাদক ছিলেন মহম্মদ জয়নাল আবেদিন। এখন চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। বলেন, ‘‘কোনও পদে নেই, তবে এখনও তৃণমূল করি।’’ তিনি বলেন, “তাঁর মৃত্যুতে সাংগঠনিক কোনও ক্ষতি হবে বলে আমার মনে হয় না। কারণ ভগবানগোলার সাংগঠনিক লোক নন তিনি। সংগঠন চালান যাঁরা, তাঁরা তো রয়েছেনই। কাজেই সাংগঠনিক কোনও ক্ষতির প্রশ্নই নেই।’’