জগদ্ধাত্রীর বিসর্জন নিয়ে সক্রিয় পুলিশ

কৃষ্ণনগর শহরে জগদ্ধাত্রী পুজোর ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ আসেন উৎসবে সামিল হতে। কিন্তু অতীতে এই পুজোকে কেন্দ্র করে একাধিক অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৭ ০০:০৬
Share:

কালীপুজোর ভাসান শান্তিপূর্ণ ভাবেই মিটেছে। জগদ্ধাত্রী পুজো নিয়েও কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না নদিয়ার পুলিশ-প্রশাসন।

Advertisement

সোমবার সন্ধ্যায় বারোয়ারি জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে পুলিশ সুপার জানিয়ে দিয়েছন, যারা নিয়ম মেনে প্রতিমা বিসর্জন দেবে না, তাদের ব্যাপারে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।

কৃষ্ণনগর শহরে জগদ্ধাত্রী পুজোর ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ আসেন উৎসবে সামিল হতে। কিন্তু অতীতে এই পুজোকে কেন্দ্র করে একাধিক অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটেছে। প্রাণহানিও হয়েছে বারবার। ভাসানের শোভাযাত্রা নিয়ে অশান্তি বেধেছে। তাই এই পুজো আর ভাসান নিয়ে অন্য পুজোর তুলনায় পুলিশের মাথাব্যথা থাকে অনেকটাই বেশি।

Advertisement

এ দিন বৈঠকে আসা বারোয়ারি পুজো কর্তাদের পরিষ্কার বলা হয়েছে, তাঁদের সদস্যদের কে কে গণ্ডগোল পাকাতে পারে, তা তাঁরা ভাল করেই জানেন। এদের সামলানোর প্রাথমিক কর্তব্য কর্মকর্তাদেরই। তাঁদের সঙ্গে যদি কেউ সহযোগিতা না করে, তা হলে পুলিশকে জানাতে পারেন। পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।

বৈঠকে পুলিশ সুপার ছাড়াও রাজ্যের কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, কৃষ্ণনগরের পুরপ্রধান অসীম সাহা হাজির ছিলেন। সকলেই নির্দিষ্ট সময় ও নিয়ম মেনে ভাসানের শোভাযাত্রা ও প্রতিমা নিরঞ্জনের উপরে জোর দেন। সকলের মতেই, ভাসানে দেরি হওয়া বা বিশৃঙ্খলার সবচেয়ে বড় কারণ সময়সূচি মেনে না চলা।

অনেক বারোয়ারির ক্ষেত্রে কাঁধে করে প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার সময়ে বাহকদের সমস্যা হয়। মাঝপথে দাঁড়িয়ে যায় প্রতিমা। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। অশান্তি বাধে। পুলিশ সুপার জানান, এ রকম ক্ষেত্রে পুলিশের পক্ষ থেকে গাড়িতে প্রতিমা তুলে বিসর্জন করে দেওয়া হবে। শোভাযাত্রায় যে কোন ধরনের বাজি পোড়ালে সঙ্গে-সঙ্গে গ্রেফতার করা হবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য বিরাট প্রতিমা। সেই প্রতিমা বাহকদের কাঁধে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বিসর্জনে। বিভিন্ন রাস্তায় বিদ্যুতের তারের সঙ্গে প্রতিমা ঠেকে যায়। এক জন প্রতিমার কাঠামোর উপরে উঠে লাঠি দিয়ে তার সরান। তাতে জীবনহানির আশঙ্কা থাকে। পুলিশ তাই প্রতিমা ছোট করার জন্য আবেদন জানিয়েছে। পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “কারও প্রাণ গেলে আপনাদের উৎসব মাটি হয়ে যাবে। তাই সেই দিকটা দেখার দায়িত্ব আপনাদেরই।”

পুলিশ এ-ও জানিয়েছে যে, কেউ যদি বিসর্জনের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিমা না তোলে, তা হলে তাকে একেবারে পিছন সারিতে ঠেলে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে কিছু পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে পুলিশ। অতীতে গণ্ডগোল করেছে এমন ২০ জনকে চিহ্নিত করে তাদের দিয়ে বন্ডে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের ছবিও তুলে রাখা হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, “যে কোনও মূল্যে আমরা এ বারের জগদ্ধাত্রী পুজোয় অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা রুখতে চাইছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement