ভোট দিলি না, মার তৃণমূলের

আমাদের ভোট দিবি তো— রীতিমতো শপথ করিয়ে নেওয়া চেষ্টা করেছিল তৃণমূলের কর্মীরা। রাজি না হওয়ায় দুই কংগ্রেস কর্মীর পরিবারেকে পিটিয়ে, বোমা মেরে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল শাসক দলের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৬ ০২:২৬
Share:

হাসপাতালে সেলিনা। নিজস্ব চিত্র।

আমাদের ভোট দিবি তো— রীতিমতো শপথ করিয়ে নেওয়া চেষ্টা করেছিল তৃণমূলের কর্মীরা। রাজি না হওয়ায় দুই কংগ্রেস কর্মীর পরিবারেকে পিটিয়ে, বোমা মেরে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল শাসক দলের বিরুদ্ধে।

Advertisement

ঘটনায় আহত তিন জনকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে সেলিনা খাতুন দশম শ্রেণির ছাত্রী। শুক্রবার রাত্রে রঘুনাথগঞ্জ থানার সেকেন্দ্রা গ্রাম পঞ্চায়েতের ইমামনগর গ্রামে এই ঘটনার পর পুলিশি টহল চললেও শনিবার রাত পর্যন্ত অভিযুক্তদের কাউকেই গ্রেফতার করেনি পুলিশ বলে অভিযোগ। রঘুনাথগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের সেকেন্দ্রা পঞ্চায়েতটি বছর খানেক আগেই দখল করেছে তৃণমূল।

গ্রামেরই বিশ্বাসপাড়ায় বাড়ি লাখু সেখের পরিবারের। তার স্ত্রী মোমেদা বিবি বলেন,“ ভোটের আগে পাড়ার প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে তৃণমূলের নেতারা শাসিয়ে যান ঘাসফুলে ভোট দিতে বলে। আমরা বলেছিলাম দেব। কিন্তু ভোট দিতে গিয়ে মন সায় দিল না, তাই ভোট দিই হাত চিহ্নে। চুপচাপ ভোট দেওয়ায় ভেবেছিলাম কে আর জানতে পারবে?’’ কিন্তু শুক্রবার সকালেই তৃণমূলের লোকজন বাড়িতে এসে জানতে চায় কাকে ভোট দিয়েছেন মোমেদারা। তারপরেই শুরু হয় ভাঙচুর। প্রাণ ভয়ে গ্রামের বাইরে ফুটানি মোড় বলে এক জায়গায় গিয়ে সকালে আশ্রয় নিয়েছে পরিবারটি।

Advertisement

মেয়ে সেলিনা বলেন, “সারা দিন সেখানেই কাটাই। সন্ধ্যে লাগতেই বাড়ি ফেরার চেষ্টা করি সব শান্ত হয়ে গিয়েছে ভেবে। কিন্তু বাড়ি ঢুকতেই নজরে পড়ে যাই আমরা তৃণমূল কর্মীদের। এরপরই আমাকে বেধড়ক মারতে শুরু করে তারা।’’ সেই থেকে বাড়ি ছাড়া আমরা দুই পরিবারের সকলেই। আমি ভর্তি হয়েছি হাসপাতালে। মা আমার সঙ্গেই আছে সেখানেই। বাবা কোথায় আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আছেন জানি না।”

স্থানীয় কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ও কংগ্রেসের ব্লক সম্পাদক প্রকাশ সাহা বলেন, “এ দিনই ওই গ্রামেই আর এক কংগ্রেস পরিবারের উপর বোমা নিয়ে আক্রমণ করে তৃণমূলের কর্মীরা। একজনকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়। অন্য জনের গায়ে বোমা লাগে। জাহিরুল ও মতিজুল সেখ নামে ২ জনকেই ভর্তি করা হয়েছে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে।” আতঙ্কে কংগ্রেসের অন্তত ১১টি পরিবার এখনও গ্রাম ছাড়া। তারা গ্রামে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকায় কোনোরকমে ভোটটা দিতে পেরেছে। পুলিশ নীরব দর্শক। অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ। তৃণমূলের রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সইদুল মিঞা বকুল। তিনি বলেন,“ ওদের নিজেদের পারিবারিক গোলমাল। তা থেকেই
বোমাবাজি, অশান্তি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement