প্রতীকী ছবি।
করোনা সংক্রমণের দৈনিক হার কিছুটা কমলেও ডেঙ্গি চোখ রাঙানো শুরু করেছে জেলায়। ধীরে-ধীরে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের তুলনায় এ বছরের এখনও পর্যন্ত অনেক বেশি মানুষ ডেঙ্গি-আক্রান্ত হয়েছে। তবে কারও খুব বাড়াবাড়ি হয়নি। শুক্রবার পর্যন্ত কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে দু’জন ভর্তি ছিলেন। তাঁরাও সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। সক্রিয় রোগী শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলায় এক জনও নেই।
স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০ জন। এ বছর এখনও পর্যন্ত সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ১০৪। তবে এ বছর পরীক্ষা করাতে এসেছেন অনেক বেশি মানুষ। গত বছর করোনা বাড়বাড়ন্তের জন্য জ্বর হলেও ভয়ে বাড়িতেই থাকতেন। জ্বরের কথা বলতে চাইতেন না অনেকেই। পরীক্ষাও করাতেন না। এ বারে সেই ভয়টা কাটিয়ে মানুষ পরীক্ষা কেন্দ্রে এসে পরীক্ষা করাচ্ছেন। ফলে আক্রান্তের সংখ্যাও বেশি হচ্ছে। ২০২১ সালে ২৩৬১ জনের ডেঙ্গি পরীক্ষা হয়েছিল। এ বছর এখনও পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার মানুষের পরীক্ষা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ভিলেজ রিসোর্স পার্সনরা মানুষকে সতর্ক করছেন। পুরসভার নিজস্ব টিমও রয়েছে। জ্বর হলেই ডেঙ্গি পরীক্ষা করার কথা বলা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের মূল লক্ষ্যই হল, যাতে ডেঙ্গিতে কারও মৃত্যু না হয়। সেই জন্য দ্রুত রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসার আওয়াতায় আনা হচ্ছে। আক্রান্তের নিরিখে রাজ্যের মধ্যে এ বার জেলার অবস্থান সপ্তম স্থানে। এ বছর সব থেকে বেশি ভাবাচ্ছে জেলার দক্ষিণের চাকদহ ও কল্যাণী পুরসভা এলাকা। এখানে বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন।
শুক্রবারই রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের ডেঙ্গি প্রতিরোধে আলোচনা হয়েছে। কিছু নির্দেশিকাও দেওয়া হয়েছে ডেঙ্গি প্রতিরোধে। সেই মতো শুক্রবার বিকালে এসডিও, বিডিও, বিএমওএইচ, এসিএমওএইচ আলোচনা করে বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছেন। আগামী এক সপ্তাহ ধরে জেলা জুড়ে কিষাণমাণ্ডি, বাজার, রেল স্টেশন, সরকারি অফিস, স্কুল-কলেজ পরিষ্কার করা হবে। জমাজল, বা আবর্জনা যাতে না জমে, সে দিকে নজর রাখা হবে। এর জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের চিঠি দেওয়া হচ্ছে। এসডিও, বিডিও, এসিএমওএইচরা যৌথ ভাবে কাজে নজরদারি চালাবেন।
অভিযোগ উঠছে, মশার লার্ভা ধ্বংস করার স্প্রে সঠিকভাবে গ্রামাঞ্চলের দিকে করা হচ্ছে না। যেখানে আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে শুধুমাত্র সেই এলাকাগুলোতেই করা হচ্ছে। তাতে মানুষের মধ্যে ক্ষোভও দেখা যাচ্ছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপনকুমার দাস বলেন, “মুখ্যসচিবের নির্দেশ মতো এক সপ্তাহ ধরে ডেঙ্গি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ শনিবার থেকেই জেলা জুড়ে করা শুরু হয়ে গিয়েছে।”