দ্বন্দ্ব: আসাননগর কলেজের সামনে এই ঘেরা জমি নিয়েই গণ্ডগোল।
কলেজকে জমি বিক্রি করার শর্ত হিসেবে ছেলের জন্য স্থায়ী চাকরি চেয়েছিলেন তিনি। তাতে রাজি না হওয়ায় জমি বিক্রিও করেননি।
কিন্তু আসাননগর মদনমোহন তর্কালঙ্কার কলেজের ছাত্রদের নামিয়ে কাঁটাতার দিয়ে চার বিঘে জমি ঘিরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয় বাসিন্দা প্রশান্ত রায়ের। কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং তৃণমূলের ইন্ধনেই এই উৎপাত বলে তাঁর দাবি। যদিও দুই পক্ষই তা অস্বীকার করেছে।
২০০৭ সালে কলেজ প্রতিষ্ঠার সময়েই ওই জমি নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়েছিল। কিন্তু তৎকালীন সিপিএম নেতারা জানিয়ে দেন, প্রশান্তবাবুর ছেলেকে স্থায়ী চাকরি দিতে পারবেন না। ফলে, জমি নেওয়ার বিষয়টিও থমকে গিয়েছিল। তৃণমূল বিধায়ক অবনীমোহন জোয়ারদার কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের বাড়ি তৈরির জন্য টাকা দিতে চাইলে ২০১৫ সালের মাঝামাঝি ফের আলোতনা শুরু হয়। কিন্তু তৃণমূল নেতারাও তাঁর ছেলেকে চাকরি দিতে রাজি হননি। কলেজের তরফে তাঁকে অস্থায়ী চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রশান্তবাবু তাতে নারাজ।
দ্বিতীয় বারেও কথাবার্তা কেঁচে যাওয়ার পরে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা রাস্তাঘাটে তাঁকে হুমকি দিতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। প্রশান্তবাবুর জবানিতে, ‘‘গত ২৪ মে কলেজের ছাত্রেরা আমার জমিতে নেমে পাটগাছ কেটে দেয়। ভীমপুর থানা অভিযোগ নিতে উৎসাহী না হওয়ায় কৃষ্ণনগর আদালতে অভিযোগ করি। কিছু দিন পরে ছাত্রেরা আবার আমার খেতের বেড়া ভেঙে দেয়।”
প্রশান্তবাবুর দাবি, গত ৩০ জুন তাঁর ছেলে প্রকাশ রায় কালীঘাটের বাড়িতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে সব জানান। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। বৃদ্ধের অভিযোগ, ‘‘গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ফের ছাত্রদের নামিয়ে কলেজ ঘেঁষা প্রায় চার বিঘা জমির সর্ষে চাষ নষ্ট করে কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে নিয়েছে ওরা।”
কলেজের অধ্যক্ষ অশোককুমার দাস অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “ওই জমিটা পেলে বি়জ্ঞান বিভাগ চালু করা সম্ভব হত ঠিকই। কিন্তু উনি অনেক বেশি দাম চাইছেন বলে আমরা এগোইনি। বাকি ঘটনার সঙ্গে কলেজের কেউ জড়িত নয়।” অবনীমোহনও বলেন, “কেউ কারও জমি জোর করে দখল করছে না। যত দূর জানি, জমিটি খাস বলে এলাকার মানুষই তা বেড়া দিয়ে ঘিরেছেন।” কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি বিমলেন্দু সিংহ রায় বলেন, “জোর করে জমি দখল করার প্রশ্নই নেই।”
অধ্যক্ষ জানান, সরকারি দামে যাতে কলেজকে জমিটি কিনে দেওয়া হয়, তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছে।