অচলাবস্থা দীর্ঘ দিনের। একে একে বেহাত হয়ে গিয়েছে আশ্রমের লাগোয়া জমি। মাস কয়েক হল, হাত পড়েছে আশ্রমের খোলা মাঠেও। চাকদহ শিমুরালির ভাগীরথী শিল্পাশ্রমের আবাসিকদের আশঙ্কা, শেষ পর্যন্ত তাঁদের আশ্রয়টাই না হারিয়ে যায়।
সেই আশঙ্কাতেই আবাসিকেরা দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রশাসনের কাছে। সাড়া মেলেনি। এ বার, তাই সটান মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। আর তার জেরেই নবান্ন থেকে তলব হয়েছে সবিস্তার রিপোর্ট।
মুখ্যমন্ত্রীর দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কল্যাণীর বিধায়ক রমেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের কাছেও জানতে চাওয়া হয়েছে আশ্রমের খুঁটিনাটি। মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, সরজেমিন শিমুরালি গিয়েই যেন ওই রিপোর্ট দেওয়া হয়। তবে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিই নন, জেলা প্রশাসনের কাছেও জানতে চাওয়া হয়েছে, আশ্রমের অচলাবস্থার কারণ কী? সহায় সম্বলহীন মহিলাদের জন্য ১৯৪২ সালে তৈরি হয়েছিল ভাগীরথী শিল্পাশ্রম। পরে তা বদলে যায় অনাথ মেয়েদের হোমে। রাজ্যের নারী কল্যাণ এবং জনশিক্ষা দফতর অনুদানে হোমের খরচ মেটে অনেকটাই। এক সময় আশ্রমের নামে প্রচুর জমি ছিল। ছিল বাগান-পুকুর। অভিযোগ, গত তিন বছর ধরে আশ্রমের বাইরের জমি লাগাতার বিক্রি করছে বর্তমান পরিচালন কমিটি। সম্প্রতি আশ্রমের ভিতরের জমিও বিক্রি করা শুরু হয়। যারা জমি কিনেছে, তারা আশ্রমের মধ্যেই পাঁচিল তুলে দেয়। রুখে দাঁড়ায় আবাসিকরা। ভেঙে দেয় সেই পাঁচিলও। কেন এই অবস্থা?
শিল্পাশ্রমের পরিচালন কমিটির সহ-সভাপতি বর্ণালি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওখানকার আবাসিকদের অযথা তাতানো হচ্ছে। পরিস্থিতি যা, তাতে আমরা ওখানে যেতে ভয় পাচ্ছি। তবে আইন মেনেই জমি বিক্রি হয়েছে।’’ তা হলে সমস্যা কোথায়?
সমস্যা বরং বেড়েছে আবাসিকদে দিনযাপনে। অভিযোগ, নানা ভাবে হুমকি দেওয়া শুরু হয়েছে তার পরেই। খাবারেও টান পড়েছে করে। পরিচালন কমিটির সদস্যরাও আশ্রমে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। বেপাত্তা হোমের সুপারও। চরম সমস্যায় পড়ে আবাসিকরা প্রশাসনের দ্বারস্ত হয়। সপ্তাহখানেক আগে তাঁরা চাকদহ-কল্যাণী সড়ক অবরোধ করেন।