—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সাত দিন ধরে ঘুরলেও সরকারি হাসপাতালে মিলছে না জলাতঙ্কের টিকা। অনেকের টিকার নির্দিষ্ট তারিখ পেরিয়ে গেলেও চতুর্থ বারের জলাতঙ্কের টিকা পাচ্ছেন না রানাঘাট মহকুমা হাসপাতাল থেকে, অভিযোগ এমনই। বিনামূল্যে টিকা সরকারি হাসপাতাল থেকে পাওয়ার কথা থাকলেও বর্তমানে ওই জলাতঙ্কের টিকা বাইরে থেকে বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি সপ্তাহে গড়ে প্রায় ৬০ জন রোগী জলাতঙ্কের টিকার জন্য হাসপাতালে আসেন। রানাঘাটের পায়রাডাঙার বাসিন্দা বিমল বিশ্বাস পেশায় গাড়ি চালক। সপ্তাহখানেক আগে তাঁর বছর দশের ছেলেকে কুকুর কামড়ায়। তখন থেকেই জলাতঙ্কের টিকার জন্য তিনি রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের আসছেন। প্রতি বারই হাসপাতালের তরফে তাঁকে জানানো হয়েছে— এই মুহূর্তে ওই টিকা হাসপাতালে নেই। বিষয়টি নিয়ে বিমল বলেন, ‘‘হাসপাতাল থেকে বলা হয়েছে, বাইরে থেকে ওই টিকা এনে দিলে হাসপাতালের নার্সেরা তা দিয়ে দেবেন। কিন্তু আমার পক্ষে বাইরে থেকে টিকা কেনা সম্ভব নয়।’’
শুধু বিমল বিশ্বাসই নন। গত শুক্রবার টিকার চতুর্থ ডোজ় নিতে হাসপাতালে আসেন রাজকুমার দেবনাথ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘হাসপাতাল থেকে টিকা নিতে গেলে বলা হচ্ছে, সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।তাই বাইরে থেকে পাঁচ জন যৌথ ভাবে ওই টিকা কিনে নিয়ে আসুন।’’
‘অ্যান্টি-র্যাবিস ভ্যাকসিন’ সরবরাহের ক্ষেত্রে সমস্যা কোথায়?
রানাঘাট মহকুমা হাসপাতাল সুপার প্রহ্লাদ অধিকারী বলেন, ‘‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করছি, মঙ্গলবার জেলা স্তর থেকে টিকা সরবরাহ করা হবে।’’
তাঁর কথায়, ‘‘বিভিন্ন গ্রামীণ এবং ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে পর্যাপ্ত টিকা রয়েছে। তাই আমাদের হাসপাতালে আসা রোগীদের অন্য সরকারি হাসপাতাল থেকেই টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। অনেকেই জানতে চাইছেন বাইরে থেকে কিনে নিয়ে এলে হাসপাতাল থেকে সেই টিকা দিয়ে দেওয়া হবে কিনা। সে ক্ষেত্রে একটি ভায়োল থেকে যেহেতু পাঁচজনের টিকা দেওয়া সম্ভব, তাই অনেক সময় স্বাস্থ্যকর্মীরা পাঁচ জনকে একসঙ্গে ওই টিকা কিনতে বলছেন।’’
চিকিৎসকের কথায়, বিড়াল, কুকুর, বাঁদর বা অন্য কোনও প্রাণীর কামড়ে আহত রোগীদের আহত হওয়ার দিনেই এই টিকা দেওয়ার কথা। এর পর তৃতীয়, সপ্তম ও আঠাশতম দিনে পর্যায়ক্রমে মোট চার বার টিকা দিতে হয়। যাঁরা ইতিমধ্যেই টিকার প্রথম বা দ্বিতীয় ডোজ় নিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও পরবর্তী টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়েছে।
সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর? বিষয়টি নিয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জ্যোতিষচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘জেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে জলাতঙ্কের টিকা রয়েছে। রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে পক্ষ থেকে সময়ে টিকা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা জানানো হয়নি। রোগীদের যাতে সমস্যায় পড়তে না হয়, সেই ব্যবস্থাই করা হবে।’’