মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে সোমবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে ব্যাঙ্কশাল আদালত।—ফাইল চিত্র।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ একাধিক বার ডাকা সত্ত্বেও হাজির হননি তিনি। এমনকি আদালত নির্দেশ দেওয়ার পরেও নির্দিষ্ট সময়ে হাজিরা দেননি থানায়। আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে সোমবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে ব্যাঙ্কশাল আদালত। প্রতারণার মামলায় গ্রেফতারি এড়াতে আজ, মঙ্গলবারেই দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন মুকুল।
বছরখানেক আগে এক রেলকর্মীর কাছ থেকে হিসেব-বহির্ভূত প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছিল। পুলিশ জানায়, সেই মামলার তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মুকুলকে ডেকেছিলেন তদন্তকারীরা। ওই মামলার বিশেষ সরকারি আইনজীবী তরুণ চট্টোপাধ্যায় জানান, পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে ব্যাঙ্কশাল আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট মনোদীপ দাশগুপ্ত এ দিন বড়বাজার থানার ওসি-কে নির্দেশ দিয়েছেন, ২৯ অগস্টের মধ্যে মুকুলকে আদালতে হাজির করাতে হবে। সরকারি আইনজীবী জানান, কল্যাণ রায়বর্মণ নামে শিবপুরের এক বাসিন্দা ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই বড়বাজার থানা এলাকায় পুলিশের জালে ধরা পড়েন। তাঁর কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয় ৮০ লক্ষ টাকা। ওই সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে মামলা করে বড়বাজার থানা। তদন্তের দায়িত্ব পান অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (এসি) অসীম আলি। সেই মামলায় আরও চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, তদন্তে মুকুলের নাম উঠে আসে। মুকুলের বয়ান নথিভুক্ত করার জন্য তাঁকে তিন বার ডাকা হয়। তিনি হাজির হননি।
লালবাজার জানিয়েছে, মুকুল হাজির না-হওয়ায় তদন্তকারী অফিসার গত জানুয়ারিতে তাঁকে ডেকে পাঠানোর জন্য আদালতে আর্জি জানান। আদালত তিন বার মুকুলকে ডেকে পাঠায়। সোমবারেও তিনি আদালতে হাজির না-হওয়ায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
মুকুলের কলকাতার আইনজীবী শুভাশিস দাশগুপ্ত এবং দিল্লির আইনজীবী কবীরশঙ্কর বসু জানান, কলকাতা পুলিশ ব্যাঙ্কশাল আদালতে আবেদন করায় তাঁদের মক্কেল মুকুল দিল্লি হাইকোর্টে পাল্টা মামলা করে জানান, তিনি যে-হেতু দিল্লিতে থাকেন, তাই বড়বাজার থানার পুলিশ যেন দিল্লিতে গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাঁরা সব রকম সহযোগিতা করবেন। কলকাতা পুলিশ তা মেনেও নেয় বলে দাবি শুভাশিসবাবুর। ওই আইনজীবী বলেন, ‘‘সম্প্রতি আমরা দিল্লি হাইকোর্টে দায়ের করা ওই আবেদন তুলে নিয়ে নতুন করে আবেদন করি। সেই আবেদনের ভিত্তিতে দিল্লি হাইকোর্ট কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। আর তারই মধ্যে এ দিন ব্যাঙ্কশাল আদালত এই নির্দেশ দিয়েছে।’’ সূত্রের খবর আজ, মঙ্গলবার দিল্লি হাইকোর্টে ওই আবেদনের শুনানি রয়েছে।
দিন সাতেক আগে কলকাতা পুলিশ নতুন করে মুকুলকে নোটিস পাঠিয়ে জানায়, তারা দিল্লি গিয়ে তদন্ত করতে প্রস্তুত। কবীরশঙ্করের কথায়, ‘‘আমাদের তাতে আপত্তি নেই। কিন্তু সবার আগে আমার মক্কেলের নামে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে থাকা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। কারণ আইন বলে, কোনও মামলায় দু’দিক থেকে কাউকে বিপদে ফেলা যায় না।’’