শান্তির বার্তা নিয়ে মীনাক্ষী। নিজস্ব চিত্র।
এ বারের বিধানসভা ভোটে রাজ্যের সব চেয়ে আলোচিত কেন্দ্রে সিপিএমের প্রার্থী ছিলেন। নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারীর ‘হেভিওয়েট’ লড়াইয়ে ভোটের বাক্সে প্রায় উড়েই গিয়েছেন তিনি। তৃণমূলের নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেওয়ার আগের দিন সেই নন্দীগ্রামের পথেই শান্তি মিছিল নিয়ে ফিরলেন সিপিএমের যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। বিজয়ী বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী যখন ‘হামলা’র আশঙ্কায় নন্দীগ্রাম এড়িয়ে চলছেন, সেই সময়ে সিপিএমের এই উদ্যোগ নজর কেড়েছে রাজনৈতিক শিবিরের।
রাজনৈতিক হিংসা ও সাম্প্রদায়িক বিভাজন বন্ধ এবং শান্তি ও সম্প্রীতির দাবিতে রবিবার নন্দীগ্রামে সংযুক্ত মোর্চার ডাকে মিছিলে ছিলেন মীনাক্ষী, সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি প্রমুখ। মিছিলে অবশ্য তেমন কিছু লোক হয়নি। ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে নন্দীগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় যে অশান্তি চলছে, সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্বের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তার বিরুদ্ধেই সরব হয়েছেন মীনাক্ষী। মিছিল শেষে ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সভানেত্রী বলেন, ‘‘ভোটের প্রচারের সময় এখানকার মানুষ বলেছিলেন, নন্দীগ্রাম অশান্তির জায়গা নয়। নন্দীগ্রামকে যেন আর অপমানিত হতে না হয়, তোমরা দেখো। এখন নতুন সরকার তৈরি হয়েছে, নতুন বিধায়ক হয়েছেন, তবু বাজারে মানুষ সন্ত্রস্ত। সবাই ভয়ে আছেন, দেখে নিচ্ছেন কার পাশে দাঁড়িয়ে আছি। কেন এমন অবস্থা হবে?’’ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রশাসনিক সক্রিয়তার দাবি তুলেছেন সিপিএম নেতারা।
গোটা রাজ্যেই এক ঝাঁক তরুণ মুখকে এ বার ভোটের ময়দানে নামিয়েছিল সিপিএম। জিততে না পারলেও তাঁদের অনেকেই নিজেদের কেন্দ্রে দু’বছর আগের লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় ভোট বাড়িয়েছেন। নন্দীগ্রামে অবশ্য তীব্র মেরুকরণের আবহে সেটাও হয়নি। কিন্তু মীনাক্ষীকে ফের নন্দীগ্রামে পাঠিয়ে সিপিএম বার্তা দিয়ে রাখল, তরুণ মুখেদের উপরেই ভরসা রেখে তারা লড়াই চালাতে চায়। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘নন্দীগ্রামে মীনাক্ষীর জেতার পরিস্থিতি ছিল না। কিন্তু মানুষের কাছে এখন এই কথাটা পৌঁছনো দরকার যে, হেরে গিয়েও বামপন্থীরা ময়দান ছেড়ে যায়নি।’’ মীনাক্ষী প্রার্থী হওয়ার পর থেকে নন্দীগ্রামে সাংগঠনিক কাজকর্ম আবার শুরু করার কিছু সুযোগ পেয়েছিল সিপিএম। আপাতত সেই সংগঠনেই নজর দিতে চায় তারা।