n কাঁথির দইসাইয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে জোরকদমে। নিজস্ব চিত্র।
রাত পোহালেই অধিকারীদের ‘খাসতালুক’ কাঁথিতে জনসভা করবেন সাংসদ তথা যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু দীর্ঘ ছ’বছর বাদে নয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভা ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে অভিষেকের রাজনৈতিক দ্বৈরথ যখন চরমে, সেই সময় এই সভা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
হাইভোল্টেজ এই সভার আগের দিন শুক্রবার সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। ১১৬ বি জাতীয় সড়কের ধারে কাঁথি শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে দইসাইয়ে শেষ পর্যায়ের মঞ্চ বাঁধার কাজ চলছে জোরকদমে। এ দিন সকাল থেকে যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি-সহ তৃণমূলের জেলা স্তরের শীর্ষ নেতৃত্ব সেখানে উপস্থিত ছিলেন। গোটা এলাকা তৃণমূল আর অভিষেকের ছবি দেওয়া ব্যানার-ফ্লেক্সে মুড়ে ফেলেছেন তৃণমূল কর্মীরা। প্রস্তুতির সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের বারবার তল্লাশিও করছে সভার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বিশেষ পুলিশকর্মীরা। আর স্প্রে করে এলাকা জীবাণুমুক্ত করছেন দমকল কর্মীরা।
২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে চণ্ডীপুরে সভা করতে গিয়েছিলেন অভিষেক। সে সময় মঞ্চে উঠে তাঁকে এক যুবক চড় মেরেছিলেন। আজ, শনিবার পুরনো অপ্রীতিকর অবস্থা এড়িয়ে অভিষেকের সভায় লক্ষাধিক কর্মী-সমর্থক জড়ো করতে তৎপর জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। এর জন্য প্রায় হাজার চারেক অটো এবং কয়েকশো বাস নেওয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
এ দিকে, এমনিতেই শনিবার সপ্তাহ শেষে ছুটি কাটানোর জন্য প্রচুর পরিমাণ পর্যটক দিঘা বেড়াতে যান। সবার জন্য এত বিপুল সংখ্যায় গাড়ি তুলে নেওয়া হলে পর্যটকদের একাংশ সমস্যায় পড়তে পারেন বলে আশঙ্ক। পাশাপাশি, নন্দকুমার থেকে ১১৬ বি জাতীয় সড়কে তীব্র যানজট তৈরি হবার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। পর্যটকদের হয়রানি এড়াতে বাজকুল থেকে বিকল্প রাজ্য সড়ক ধরে দিঘা-এবং বাকি পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে তাঁদের পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার প্রবীণকুমার প্রকাশ বলেন, ‘‘যেখানে সভা হচ্ছে, সেই সভাস্থল এবং আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা পর্যাপ্ত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে পর্যটকদের যাতে অসুবিধা না হয়, তার জন্যও বিকল্প পরিকল্পনা তৈরি।’’
শুভেন্দু বিজেপিতে চলে গেলেও তাঁর সাংসদ বাবা এখনও জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন। সমস্ত সরকারি পদ ছেড়ে দেওয়ার পরেও তৃণমূলে রয়েছেন আরেক সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। তারা ওই সভায় যাবেন না বলেই ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে নতুন করে কিছু বলার নেই।’’
যদিও যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি বলছেন, ‘‘কাউকেই আলাদা করে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না। দলের কর্মী-সমর্থকেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সভায় যোগ দেবেন।’’
এ দিন, বিকেলে আবার কাঁথি-৩ ব্লকের কালিনগরে অভিষেকের ছবি দেওয়া বেশ কিছু ব্যানার এবং ফ্লেক্স ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে সেখানে মারিশদা থানার পুলিশ সেখানে যায়। আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যদি অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূলই সর্বত্র বিরোধীদের পতাকা, ব্যানার-ফেস্টুন ছিড়ে দেয়। সহানুভূতি কুড়নোর জন্য নিজেরা ব্যানার এবং ফেস্টুন ছেড়ে বিজেপির ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে।’’