রানিচক পরিদর্শনে স্বাস্থ্যকর্তারা

আক্রান্তের সংখ্যা এখন প্রায় ১১৬। তাঁদের মধ্যে ১২ জনের রক্ত পরীক্ষায় এনএস-১ পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। ফলে উদ্বেগে স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৭ ০০:০০
Share:

পরিদর্শন। নিজস্ব চিত্র

অবশেষে টনক নড়ল স্বাস্থ্য দফতরের। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নেতৃত্বে দাসপুরের রানিচক গ্রামে পৌঁছল প্রতিনিধি দল। গত কয়েকদিনে শতাধিক বাসিন্দা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের সকলেরই চিকিৎসা হয়েছে হাতুড়ের কাছে। সংবাদ মাধ্যমে সে খবর প্রকাশিত হতেই শুরু হয়েছে সরকারি নজরদারিতে চিকিৎসা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রানিচকে যান পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারি গিরীশচন্দ্র বেরা। সঙ্গে ছিলেন সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান, দাসপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ আশিস হুতাইত, জেলা স্বাস্থ্য স্থায়ী কমিটির সদস্য পঞ্চানন মণ্ডল-সহ এক চিকিৎসক দল। সূত্রের খবর, এ দিনই নতুন করে চারজন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন ওই গ্রামে। পুজোর আগে থেকেই জ্বরের প্রকোপ বাড়ছিল। আক্রান্তের সংখ্যা এখন প্রায় ১১৬। তাঁদের মধ্যে ১২ জনের রক্ত পরীক্ষায় এনএস-১ পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। ফলে উদ্বেগে স্বাস্থ্য দফতর।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় ১০ দিন ধরে জ্বরের প্রকোপ চললেও স্বাস্থ্য দফতর বা ব্লক প্রশাসনের তরফে কেউ গ্রামে আসেননি। এ দিন অবশ্য গ্রামের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে স্থানীয় জন-প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। পাশাপাশি সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার কাজও শুরু হয়। প্রায় ২০জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহও করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে। শুক্রবার থেকে স্থানীয় রানিচক হাইস্কুলে মেডিক্যাল ক্যাম্প শুরু হচ্ছে।

Advertisement

এ দিন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ স্বাস্থ্য কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কথা বলেন আক্রান্তদের সঙ্গে। জ্বরে আক্রান্ত এক বাসিন্দা জগদীশ মণ্ডল অধিকারী বলেন, “ঘাটালে গিয়ে ডাক্তার দেখানোর সামর্থ্য আমাদের অনেকেরই নেই। গ্রামেই চিকিৎসার ব্যবস্থা হওয়াটা জরুরি।” গ্রামেই রক্ত পরীক্ষা-সহ যাবতীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। গিরীশচন্দ্রবাবু বলেন, “রক্ত পরীক্ষায় ইতিমধ্যেই ম্যালোরিয়া ও টায়ফয়েড জীবাণু মিলেছে। বেশ কয়েকজনের ডেঙ্গির উপসর্গও পাওয়া গিয়েছে। তাই এ বার ম্যাক অ্যালাইজা পরীক্ষা ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।”

তবে গ্রামের যত্রতত্র ঝোপ-জঙ্গল ও জমা জল দেখেই চটে যান তিনি। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে সচেতনতা প্রচার শুরু হয়েছে। জমা জল পরিষ্কার, জঙ্গল সাফাই, পুকুরগুলিতে ব্লিচিং ছড়ানোর জন্য পঞ্চায়েতকেও আর্জি জানানো হয়। রানিচক পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান সুবীর মণ্ডল বলেন, “দ্রুত সব পরিষ্কার করা হবে।”

পুকুরের জল ব্যবহার সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করতেও নির্দেশ দেন স্বাস্থ্য কর্তারা। সেই সঙ্গে বন্যার জলে ডুবে থাকা নলকূপগুলি দ্রুত সংস্কারের বিষয়েও আলোচনা হয়। বিলি করা হয় লিফলেটও। ব্লক স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ আশিস হুতাইত বলেন, “সব নলকূপ ও ট্যাপগুলি সংস্কার করা হবে।”

ঘাটালের মহকুমাশাসক পিনাকীরঞ্জন প্রধান বলেন, “আমরা সতর্ক। আক্রান্তের সংখ্যা যাতে আর না বাড়ে, সে দিকেও কড়া নজর দেওয়া হয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement