দ্বারিকেশ পট্টনায়েককে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাচ্ছেন অগ্নিমিত্রা পাল এবং জুন মালিয়া (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।
সাধের বাড়িতে ফিরলেন দ্বারিকেশ পট্টনায়েক। তবে কফিনবন্দি হয়ে। শনিবার মেদিনীপুরে তাঁর দেহ হাতে পেল পরিবার। মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার দু’দিন পরে।
বুধবার কুয়েতের অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয় দ্বারিকেশের। বৃহস্পতিবার সকালে সেই মৃত্যুসংবাদ পান তাঁর পরিবার- পরিজন। তার ৪৮ ঘণ্টা পরে শনিবার সকাল ১১টা ১০ মিনিটে মেদিনীপুরের শরৎপল্লীতে দ্বারিকেশের বাড়িতে এসে পৌঁছয় তাঁর দেহ। তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে মেদিনীপুরের বাড়িতে হাজির ছিলেন মেদিনীপুর থেকে লোকসভা নির্বাচনে জয়ী প্রার্থী জুন মালিয়া। পরে এলাকার বিজেপি নেতারাও শ্রদ্ধা জানাতে আসেন দ্বারিকেশের বাড়িতে।
শুক্রবার রাতেই কুয়েত থেকে কেরলের কোচিতে এসে পৌঁছেছিল দ্বারিকেশ-সহ কুয়েতে কর্মরত ৪৫ জন ভারতীয়ের দেহ। পরে সেখান থেকে দ্বারিকেশের দেহ বিমানে রওনা করানো হয় কলকাতার উদ্দেশে। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার সময় দমদম বিমানবন্দরে দেহ গ্রহণ করেন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। উপস্থিত ছিলেন বিজেপির বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। বিমানবন্দরেই দ্বারিকেশের কফিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানান তাঁরা। পরে সড়ক পথে মেদিনীপুরের উদ্দেশে রওনা করানো হয় কফিনবন্দি দ্বারিকেশের দেহ। জুন দ্বারিকেশের দেহ নিয়ে তাঁর বাড়িতে যান। ডেকে আনেন তাঁর স্ত্রী এবং কন্যাকে। পরে সেখান থেকে দাঁতনে দ্বারিকেশের জন্মভিটের উদ্দেশে দেহ নিয়ে রওনা হয় দ্বারিকেশের পরিবার। সেখানেই তাঁর শেষকৃত্য হওয়ার কথা।
মেদিনীপুরের দাঁতন-২ তুরকা অঞ্চলের খণ্ডরুইয়ে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি ছিলেন দ্বারিকেশের শ্বশুরমশাই। নাম কমলাকান্ত পট্টনায়েক। দ্বারিকেশকে শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হয়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা নেত্রীদের অনেকেই। পরে জুন বলেন, ‘‘আমাকে দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) এখানে পাঠিয়েছেন। পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছি। পরিবারকে ভাল রাখতে এঁরা বিদেশে গিয়ে কাজ করেন। তাঁদের সাথে এমন একটা ঘটনা ঘটলে মন ভারাক্রান্ত হয়ে যায়।’’
বুধবার ভোরে কুয়েতের রাজধানী শহরের দক্ষিণে মানগাফ এলাকায় এক বহুতলে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয় দ্বারিকেশের। তবে তাঁর মৃত্যু সংবাদ পরিবার পায় ২৪ ঘণ্টা পরে বৃহস্পতিবার সকালে। পরিবার বলতে দ্বারিকেশের স্ত্রী এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে পাঠরত একমাত্র কন্যা। পরিবার সূত্রে খবর, কন্যার ১৮ বছরের জন্মদিন তাঁর সঙ্গে থেকে পালন করবেন বলে এ বছর অক্টোবরে বাড়ি ফেরার কথা ছিল দ্বারিকেশের। কিন্তু সেই ইচ্ছে অপূর্ণই থেকে গেল তাঁর।