প্রতীকী ছবি।
জঙ্গলমহলে হাতির হানায় দাঁড়ি পড়ছে না। বৃহস্পতিবার রাতে দাঁতাল-বাহিনী হানা দেয় ঝাড়গ্রাম ব্লকের চুবকা অঞ্চলের পাকুড়িয়াপাল গ্রামে। হাতির তাণ্ডবে তছনছ হয়েছে আলু ও আখ খেত। মাথায় হাত পড়েছে প্রায় ৩০ জন চাষির। সকলেই ঋণ নিয়ে আলু, আখ ও আনাজ চাষ করেছিলেন। আর কয়েকদিন পরেই জমি থেকে আলু তোলার কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল।
বৃহস্পতিবার রাতেই বাঁধগোড়া অঞ্চলের নুনিয়াকুন্দ্রি গ্রামে হানা দেয় তিনটি হাতি। ভাঙচুর চালায় তিনটি বাড়িতে। শুক্রবার সকালে আবার ঝাড়গ্রামের জারুলিয়ার জঙ্গল রাস্তায় বাইকে যাওয়ার সময়ে অল্পের জন্য বেঁচেছেন ঝাড়গ্রাম থানার দুই সিভিক ভলান্টিয়ার। হাতি বাইকটি ভেঙেছে।
বৃহস্পতিবার রাত আটটা নাগাদ প্রায় ১৫-২০টি হাতির দল মেদিনীপুর সদর ব্লকের জামশোলের দিক থেকে কংসাবতী পেরিয়ে পাকুড়িয়াপালে ঢুকে পড়ে। শীতের রাতে আচমকা হাতির দল ঢুকে পড়ায় প্রথমে বুঝতে পারেননি গ্রামবাসী। ততক্ষণে হাতি নেমে পড়েছে আলু, আখ আর আনাজ খেতে। মাড়িয়ে-খেয়ে তছনছ করেছে খেত। গ্রামবাসী হুলা জ্বালিয়ে, পটকা ফাটিয়ে ঘন্টা পাঁচেকের চেষ্টায় হাতির দলটিকে খেদিয়ে নদীর দিকে পাঠাতে সমর্থ হন। রাত তিনটে নাগাদ দলটি কংসাবতী পেরিয়ে মেদিনীপুর সদর ব্লকের লোহাটিকরির দিকে চলে যায়। আলু চাষি জিতেন মেট্যা, গৌর মেট্যা, চুনিলাল সরেনরা বলেন, ‘‘হাতিরা পথে বসিয়ে দিল। কী ভাবে ধার শোধ করব জানি না।’’ একই অবস্থা টুপেন দাসের মতো আখ ও আনাজ চাষিদেরও।
এ দিন সকালে ডিউটি সেরে বাইকে বাঁকশোল গ্রামে বাড়ি ফেরার পথে ঝাড়গ্রাম থানার সিভিক ভলান্টিয়ার যতীন্দ্রনাথ মাহাতো ও সত্যজিৎ মাহাতো জঙ্গল রাস্তায় হাতির সামনে পড়েন। হাতিটি তেড়ে এলে প্রাণ বাঁচাতে ছুটে পালান তাঁরা। হাতিটি বাইকটি ভেঙে দেয়। যতীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘চারদিকে এত হাতি যে, এখন জঙ্গলপথে যাতায়াত করাটাই বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’
ডিএফও (ঝাড়গ্রাম) বাসবরাজ হলেইচ্চি বলেন, ‘‘ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। হাতির বাইক ভাঙার বিষয়টি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।’’