শুক্রবার তমলুকের মানিকতলা বাসস্টপ। টোটো ও ভ্যান রিকশা থাকলেও বাসের দেখা নেই। নিজস্ব চিত্র
আড়াই মাস বন্ধ থাকার পরে শুক্রবার জেলার স্থানীয় রুটে চালু হওয়ার কথা ছিল বেসরকারি বাস পরিষেবা। সেই মতো সকালে নির্দিষ্ট ওই রুটে কয়েকটি বাসের দেখা মেলে। কিন্তু বেলা যত গড়িয়েছে, রাস্তা থেকে যেন ‘ভ্যানিশ’ হয়ে গিয়েছে সেই সব বাস। ভোগান্তি হল যাত্রীদের।
লকডাউনে পূর্ব মেদিনীপুরে সমস্ত বাস পরিষেবা বন্ধ ছিল। সম্প্রতি কয়েকটি দূরপাল্লার রুটে সরকারি এবং বেসরকারি বাস চললেও স্থানীয় রুটে বাসের দেখা মেলেনি। বাস মালিকদের সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকের পরে এ দিন থেকে পুরনো ভাড়াতেই হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং হলদিয়া - মেচেদা রাজ্য সড়কে মোট ১০টি বাস পরিষেবা চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অভিযোগ, রাস্তায় ১০টি বাস তো নামেইনি, উল্টে যে ক’টি বাস নেমেছিল, সেগুলিও দুপুরের পরে পরিষেবা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। বাস মালিকদের অবশ্য দাবি, এদিন পরীক্ষামূলকভাবে হলদিয়া-মেচেদা রুটে বাস চালানো শুরু হয়েছিল। কিন্তু খুব অল্পসংখ্যক যাত্রী থাকায় দুপুরের পর আর বাস চালানো হয়নি। মালিকদের আশ্বাস, আজ, শনিবার থেকে ফের বাস চালানো হবে।
জেলা পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, লকডাউনে মাঝেই দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার ছ’টি বাস দিঘা থেকে কলকাতায় এবং তিনটি বাস হলদিয়া থেকে (ভায়া ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক) কলকাতা যাতায়াত করছে। এছাড়াও হলদিয়া-মেচেদা (ভায়া তমলুক শহর) রুটে দু’টি বাস প্রতিদিন যাতায়াত করছে। এর মধ্যেই আগামী ৮ জুন থেকে সব সরকারি-বেসরকারি অফিসে অধিকাংশ কর্মীদের নিয়ে কাজের ছাড়পত্র দিয়েছে সরকার। ফলে সরকারি কর্মীরা যাতে কর্মস্থলে যেতে পারেন, সে জন্য বেসরকারি বাস চলাচলের উপরেও জোর দেয় স্থানীয় প্রশাসন। গত ২ জুন বাস মালিক সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের নিয়ে জেলাশাসক বৈঠক করেন। তাতেই এ দিন থেকে হলদিয়া-মেচেদার দু’টি রুটে বাস চলবে বলে ঠিক হয়েছিল।
কিন্তু ১০টি বাস চলার কথা থাকলেও এ দিন ওই দু’টি রুটে মাত্র পাঁচটি বাস চলে। সেগুলিও দুপুরের পর বন্ধ করে দেওয়া হয়। আগাম ঘোষণা পরেও হলদিয়া-মেচেদা সড়কে বাস না পেয়ে অনেকে হায়রানির শিকার হন। তমলুকের পদুমবসানের বাসিন্দা প্রীতম মাইতি বলেন, ‘‘নন্দকুমারে যাব ভেবেছিলাম। বেসরকারি বাস চলবে জেনে সকাল ৯টা নাগাদ মানিকতলা মোড়ে বাস স্ট্যান্ডে অপেক্ষা করেছিলাম। প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও বাস পেলাম না।’’ পরিবহণ যাত্রী কমিটির জেলা সম্পাদক তপন ভৌমিক এ ব্যাপারে বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের কথা ভেবে প্রয়োজনে সরকারি ভর্তুকি দিয়ে বেসরকারি বাস চালানোর ব্যবস্থা করা উচিত।’’
বাস মালিক সংগঠন সূত্রের খবর, এ দিন সকালে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি বেসরকারি বাস নন্দকুমার থেকে মেচেদার দিকে যায়। বাসটি ফের মেচেদা থেকে নন্দকুমার হয়ে হলদিয়া গিয়ে ফের নন্দকুমারে ফিরে আসে দুপুর ১টার মধ্যে। আবার, হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কেও সকালে মহিষাদল থেকে দু’টি বাস হলদিয়ায় যায় এবং দু’টি বাস মহিষাদল থেকে মেচাদায় যায়। কিন্তু বাসগুলিতে যাত্রী তেমন না ওঠায় দুপুরের মধ্যে সেগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
জেলা বাস ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক মহম্মদ সামসের আরেফিন বলেন, ‘‘এ দিন পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি বাস চালানো হয়েছিল। তবে বাসগুলিতে যাত্রী না ওঠায় লোকসানের জন্য দুপুরের পর বাস চালানো বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে শনিবার বাস চলবে।’’