আবোল তাবোল-এর মহড়ায়। দেবরাজ ঘোষের তোলা ছবি।
পুজোয় ছোটদের জন্য এ বার মানুষ-পুতুলে জমজমাট ‘আবোল তাবোল’। লক্ষ্য, ছোটদের গল্পের বইমুখী করে তোলা। তাই সুকুমার রায়ের জনপ্রিয় ছড়ার বইয়ের বিচিত্র সব চরিত্রদের নিয়ে এক অভিনব পুতুল নাটক প্রযোজনা করেছে ঝাড়গ্রাম আর্ট অ্যাকাডেমি। সংস্থার শিল্পীরা গত আট মাস ধরে তৈরি করেছেন অসংখ্য পাপেট ও মাপেট। পাপেট হল পুতুল। আর মাপেট হল পুতুলের খোলস। রক্তমাংসের অভিনেতারা সেই খোলস পরে পুতুলের সঙ্গে অভিনয় করবেন। গত কয়েকদিন ধরে টানা মহড়া চলছে ঝাড়গ্রাম শহরের ঘোড়াধরায় সংস্থার রামকিঙ্কর মঞ্চে।
শনিবার ১ অক্টোবর, মহরত শো হবে ওই মঞ্চেই। আর্ট অ্যাকেডেমির অধ্যক্ষ সঞ্জীব মিত্র জানালেন, এখনকার ছোটরা গল্পের বই পড়ে না। অভিভাবকদের প্রত্যাশার চাপে পড়ুয়াদের ভাবার সময় নেই। চাপের পাহাড়ের তলায় অনেক ক্ষেত্রেই ছোটদের কল্পনাশক্তির উপযুক্ত বিকাশ ঘটে না। সেই কারণেই আজকের পিকু, তিন্নিরা ভিডিও গেম-এ মশগুল থাকে। সঞ্জীববাবুর কথায়, “জেন ওয়াইয়ের নবীনতম প্রজন্মের জন্যই আমাদের এই প্রযোজনা।” পুজোর ছুটিতে বিভিন্ন জায়গায় ছোটদের নাটকটি দেখানোর ব্যবস্থা হয়েছে।
নাটকের মুখ্য চরিত্র স্কুলপড়ুয়া পিকু। আবোল তাবোলের দেশে এসে অবাক হয়ে যায় পিকু। সেখানেও খুড়োর কাঁধে কল বাঁধা। কিন্তু সেই কল পিকুর কাঁধে চাপিয়ে দেন খুড়ো। খুড়ের কল কাঁধে নিয়ে দৌড়তে গিয়ে হাঁপিয়ে পড়ে ছোট্ট পিকু। খুড়ো উৎসাহ দেন, ‘পিকু আরও জোরে দৌড়োও। দৌড়োলে ডাক্তার হবে, ইঞ্জিনিয়ার হবে।’ জোরে ছুটতে না পেরে কল ছুড়ে ফেলে দেয় পিকু। খুড়োর কল ভেঙে যায়। একুশে আইনে বোম্বাগড়ের রাজার পেয়াদারা পিকুকে গ্রেফতার করে। বিচারে ২১ দিনের ফাঁসি হয় পিকুর। ঘুম ভেঙে পিকু বুঝতে পারে, সে স্বপ্ন দেখছিল।
নাটকের বিভিন্ন পর্যায়ে মস্ত বড় ছড়ার বইয়ের পাতা থেকে মঞ্চে হাজির হবে কুমড়োপটাস, হাঁসজারু, হাতিমির, বকচ্ছপ, বোম্বাগড়ের রাজা, রামগরুড়ের ছানা, ট্যাশগরু, কাতুকুতু বুড়ো, হুঁকোমুখে হ্যাংলা-রা। নাটকের নির্দেশনা, আলো, সংলাপ ও আবহসঙ্গীত নির্মাণে রয়েছেন আর্ট অ্যাকাডেমির সকলে। সহযোগিতায় রয়েছেন কবি শুভ দাশগুপ্ত এবং সোনারপুর কৃষ্টি সংসদের বিশিষ্ট নাট্যকর্মী সংগ্রামজিৎ সেনগুপ্ত।