সবংয়ের বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েতের কুলভেরি গ্রামে জলে ডুবে রয়েছে ট্রান্সফর্মার। —নিজস্ব চিত্র।
দিন কয়েকের বৃষ্টিতে জেলার বেশ কয়েকটি এলাকা জলভাসি হয়েছে। এখনও জমে রয়েছে বৃষ্টির জল। জলমগ্ন এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যে ঘাটাল, সবং, পিংলা, ডেবরার মতো এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরুও করেছে। এই এলাকাগুলির বেশ কিছু অঞ্চল এখনও জলমগ্ন। জমা জল ধীরে ধীরে নামছে। জমা জলে ডেঙ্গিবাহী মশার বংশবিস্তার হতে পারে বলেই আশঙ্কা। প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় যাবতীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি বলেন, ‘‘কিছু নিচু এলাকায় জল জমে রয়েছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হয়েছে।’’ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী জানান, সবদিকই নিয়মিত খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিস্থিতির পর্যালোচনা হচ্ছে। সব রকমের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিছু নিচু এলাকায় জল রয়েছে। ওই সব এলাকায় নজরদারিও চলছে। চিন্তার কিছুই নেই।গত বেশ কয়েক বছরের তুলনায় পশ্চিম মেদিনীপুরে ডেঙ্গি সংক্রমণের প্রকোপ এ বারই সবচেয়ে বেশি। এর আগের ১০-১২ বছরে কখনও জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা দেড় হাজার পেরোয়নি। এ বার সংখ্যাটা দেড় হাজার পেরিয়ে দু’হাজারের দিকে। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের অবশ্য দাবি, ডেঙ্গি সংক্রমণের হার কিন্তু খুব একটা বাড়েনি। এ বার বেশি সংখ্যায় ডেঙ্গি পরীক্ষা হচ্ছে। তাই তুলনায় বেশিজনের ডেঙ্গি ধরা পড়ছে।
জানা গিয়েছে, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত এই জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১,৬১৮ জন। নিম্নচাপের জেরে গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। টানা কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি চলেছে। ১৮ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর, এই সময়ের মধ্যে জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ২৬২ জন। ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর, এই সময়ের মধ্যে ২৯০ জন। ২ থেকে ৮ অক্টোবর, এই সময়ের মধ্যে জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ২২৭ জন জন। সোমবারও নতুন করে কয়েক জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। একাংশ জেলাবাসীর দাবি, মশা- দমন কর্মসূচি ঠিকঠাক ভাবে হচ্ছে না। তাই এ বার ডেঙ্গির এতটা প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার ৭টি শহরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গি আক্রান্ত মেদিনীপুরে।