১০ নম্বর ওয়ার্ডে রেলের জমিতে তৃণমূল কার্যালয়। —নিজস্ব চিত্র।
শুধু ক্লাব নয়। রেলের জমি দখল করে থাকা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয় ভাঙা হবে। খড়্গপুর রেল ডিভিশনের পক্ষ থেকে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এমনকি, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রেলের দাবি, তাদের জমিতে বেআইনিভাবে তৈরি হয়েছে ওই সমস্ত রাজনৈতিক কার্যালয়। ক্রমেই বহর বাড়ছে রাজনৈতিক দলের কার্যালয় ভবনের। রেল জমি দখল করে এমন রাজনৈতিক দলের কার্যালয় ঠিক ক’টি রয়েছে, চলতি বছরের গোড়া থেকে তার হিসেবনিকেষ শুরু করেন কর্তৃপক্ষ। মাঝে নির্বাচন থাকায় সেই কাজে ভাটা পড়ে যায়। এ বার নির্বাচনের পরে বিজ্ঞপ্তি জারি করে গোটা প্রক্রিয়া শেষ করতে চলেছে। রেলের দাবি, পুজোর আগেই প্রথম ধাপে বেশ কয়েকটি কার্যালয় ভাঙা হবে। রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার (হেড কোয়ার্টার) সৌরভ রাজ বলেন, “আমরা নির্বাচনের আগেই ঠিক করেছিলাম খড়্গপুরে সমস্ত রাজনৈতিক দলের কার্যালয় শতাংশের হারে ভাঙা হবে। তবে নির্বাচন থাকায় স্থগিত রেখেছিলাম। এ বার ফের ওই প্রক্রিয়া শুরু করেছি। ইতিমধ্যেই সমস্ত বেআইনি কার্যালয়ে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে। ডিসেম্বরের আগেই প্রথম ধাপের ভাঙার কাজ হবে।”
রেল সূত্রের খবর, শহরে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় রেলের জমি দখল করে রয়েছে তৃণমূল কার্যালয়। আর দ্বিতীয়স্থানে রয়েছে বিজেপির কার্যালয়। দু’তিনটি বাম কার্যালয়ও রেলের জমিতে রয়েছে। সবমিলিয়ে শহরে রেলের জমি দখল করে প্রায় ৫০টি কার্যালয় রয়েছে বলে রেলের দাবি। সেগুলির মধ্যে অধিকাংশ কার্যালয়ের পাকা ভবন রয়েছে। এমনকি, গত কয়েকবছরে গড়ে ওঠা একাধিক ঝাঁ-চকচকে কার্যালয়ে বসানো হয়েছে বাতানুকুল যন্ত্র। খড়্গপুরে এমন কার্যালয় রয়েছে খড়্গপুরের পুরপ্রধানের নিজের ২০ নম্বর ওয়ার্ডেও। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল নেতা তথা পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলছেন, “এখন রেলের এলাকা পুরসভার অধীনে হওয়ায় এলাকার লোক আমাদের ভোট দিচ্ছে। আমাদের এলাকার মানুষের নানা পরিষেবা দিতে কার্যালয়ের প্রয়োজন। তাই মানুষের স্বার্থে ওই কার্যালয় তৈরি হয়েছে। রেল যদি ভাঙতে চায় তবে রেলকে আমাদের জন্য বসার ঘর সেই ওয়ার্ডে খুঁজে দিয়ে তৈরি করতে হবে।”
প্রতিবাদ জানিয়েছে শহরের অন্য রাজনৈতিক দলগুলি। সিপিএমের শহর নেতা তথা জেলা কমিটির সদস্য অনিতবরণ মণ্ডল বলেন, “জনস্বার্থে প্রতিটি রাজনৈতিক দল রেলের জমিতে কার্যালয় গড়ে তুলেছে। তাই মানুষের প্রয়োজন গড়ে ওঠা কার্যালয় রেল এভাবে ভাঙতে পারে না।” আর শহরের বাসিন্দা বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, “রেলের উচিত রাজনৈতিক দলগুলির জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা দেওয়া।” রেল অবশ্য জানিয়েছে, তাঁরা প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয় ভাঙবে। এক্ষেত্রে শতাংশের হিসাবে ওই কার্যালয় ভাঙা হবে। যে দলের যত বেশি সংখ্যক কার্যালয় তার তত বেশি সংখ্যক কার্যালয় ভাঙা হবে।