গাড়িতে গ্যাস ভর্তি করার সময় আচমকা আগুন লেগে পুড়ে গেল দু’টি গাড়ি। মঙ্গলবার দুপুরে ঘাটাল শহরের কুশপাতা এলাকার ঘটনা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল ও পুলিশ। প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে দমকল। যদিও ওই ঘটনায় হতাহতের খবর নেই। এই ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে যাত্রীদের নিরাপত্তা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করেই শহরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বেআইনি গাড়ি। সব জেনেও প্রশাসন নির্বিকার।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক সত্যব্রত হালদার বলেন, “অনুমতিবিহীন গাড়িগুলির বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। যে সকল ব্যবসায়ী বেআইনি গাড়িগুলিতে গ্যাস ভর্তির ব্যবসা করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ বেআইনি গাড়ির দাপট বাড়া প্রসঙ্গে সত্যব্রতবাবুর দাবি, ঘাটাল-সহ বিভিন্ন জায়গায় মাঝে-মধ্যেই তাঁরা বেআইনি গাড়ি ধরতে অভিযান চালান। ঘাটালে আরটিও অফিস চালু হলে এই কাজে আরও সুবিধা হবে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, এ দিনের ঘটনায় মামলা দায়ের হলেও এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
ইদানীং ঘাটাল শহরে গ্যাস চালিত গাড়ির রমরমা বেড়েছে। শুধু ঘাটাল শহরে নয়, গোটা ঘাটাল মহকুমা এলাকায় পরিবহণ দফতরের অনুমতি ছাড়াই গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে প্রায় ১ হাজার গাড়ি। এই সব গাড়িগুলিতে গ্যাস ভর্তি করার সময় কোনও নিয়ম মানা হয় না। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনাও ঘটে। নিয়ম অনুযায়ী, গাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করার আগে পরিবহণ দফতরের অনুমতি নিতে হয়। এই সময় একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিতে হয়। এমনকী সরকারি নিয়ম মেনে পাম্পে গিয়ে গ্যাস ভর্তি করতে হয়। অভিযোগ, প্রশাসনের একাংশের মদতেই বেআইনি গাড়ির রমরমা বাড়ছে। বাড়ছে কর ফাঁকির পরিমাণও।
যদিও জেলা পরিবহণ আধিকারিক সত্যব্রত হালদার বলেন, “স্থানীয় পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে আমরা অভিযান চালাই। বহু বেআইনি গ্যাসচালিত গাড়ির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, গোপন আঁতাতের অভিযোগ ঠিক নয়। কেউ গোপনে এ বিষয়ে তাঁদের কোনও খবর জানালে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ দিন ঘাটাল শহরের কুশপাতায় উত্তম পাল নামে এক ব্যবসায়ী ওই দু’টি গাড়ির সিলিন্ডারে গ্যাস ভরছিলেন। কিন্তু ঘটনার কারণ নিয়ে অন্ধকারে প্রশাসন। ঘাটালে দমকলের ওসি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘ঘটনার পর থেকেই উত্তম পাল পলাতক। ওই ঘটনার কারণও এখনও পরিষ্কার নয়। তবে ওই বেআইনি গাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা পুলিশকে জানিয়েছি।’’