নিরাপত্তার দাবিতে জুনিয়র ডাক্তারদের বিক্ষোভ। সোমবার মেদিনীপুর মেডিক্যালে। নিজস্ব চিত্র
ফের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এ বার শিশু মৃত্যু ঘিরে ধুন্ধুমার বাধল মেডিক্যাল চত্বরে। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে রবিবার ডাক্তারদের উপরে চড়াও হন মৃতের পরিজনেরা। ডাক্তারদের মারধরের ঘটনায় মৃত শিশুর পাঁচ পরিজনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।
দিন কয়েক আগেই রোগীকে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল মেডিক্যালে। এরই মধ্যে ফের শিশু মৃত্যুর ঘটনা। এ ক্ষেত্রে অবশ্য চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ মানতে নারাজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সুপার তন্ময়কান্তি পাঁজা বলেন, “একটা সমস্যা হয়েছিল। পরে তা মিটে গিয়েছে।” কেন ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে? হাসপাতালের এক কর্তার কথায়, “শিশুটির শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক ছিল। তাই এসএনসিইউ-তে রাখা হয়েছিল। বাঁচানোর সব রকম চেষ্টা হয়েছিল। তা সম্ভব হয়নি। শিশু মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক।” একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “হাসপাতালের মধ্যে ডাক্তারদের মারধরের ঘটনা অনভিপ্রেত।”
প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে গত শনিবার মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছিলেন পায়েল বিবি। তাঁর বাড়ি মেদিনীপুর গ্রামীণের রামনগরে। ওই দিনই তিনি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। রবিবার শিশুটির মৃত্যু হয়। শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় শিশুটিকে এসএনসিইউ-তে রাখা হয়েছিল। সেখানেই শিশুটির মৃত্যু হয়। মৃতের পরিজনেদের দাবি, সঠিক ভাবে চিকিৎসা হলে মৃত্যু হত না। পায়েলের স্বামী মাজেদ মণ্ডলের অভিযোগ, “ঠিক ভাবে চিকিৎসাই হয়নি।”
শিশু মৃত্যুর খবর পেয়ে রবিবার রাতে হাসপাতালে চড়াও হন মৃতের পরিজনেরা। অভিযোগ, শিশু ওয়ার্ডে ঢুকে জুনিয়র ডাক্তারদের মারধর করেন কয়েকজন। হাসপাতালের এক কর্মীও মৃতের পরিজনেদের হাতে প্রহৃত হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। পরিজনেদের মধ্যে থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পরে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। চিকিৎসকদের মারধরের প্রতিবাদে গত শনিবার কলকাতার বিভিন্ন নার্সিংহোমের বহির্বিভাগে প্রতীকি ধর্মঘট পালন করেন ডাক্তারেরা। মেদিনীপুর মেডিক্যালে মারধরের প্রতিবাদেও সরব হন জুনিয়র ডাক্তাররা। রাতের দিকে বেশ কয়েকজন জুনিয়র ডাক্তার কাজেও যোগ দেননি। ফলে, চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হয়। সোমবার সকালের দিকেও একই পরিস্থিতি চলে। বেলার দিকে জুনিয়র ডাক্তারদের এক প্রতিনিধি দল সুপারের সঙ্গে দেখা করে নিরাপত্তার দাবিতে সরব হন। এ দিন বিকেলের পর থেকে মেডিক্যালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে।