গত বছর রেলশহরে কামড় বসিয়েছিল ডেঙ্গি। তারপরেও বর্ষার মরসুমে রাস্তায় জমে জঞ্জাল। খড়্গপুরের মালঞ্চ রোডে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
খড়্গপুর: ডেঙ্গি কি না নিশ্চিত হতে রক্তের ম্যাক এলাইজা পরীক্ষা জরুরি। কিন্তু খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে এত দিন এই পরীক্ষার ব্যবস্থা ছিল না। মেদিনীপুর মেডিক্যালে রক্তের নমুনা পাঠিয়ে রিপোর্ট আসতে ৪-৫দিন সময় লেগে যেত। ততদিনে কারও শারীরিক অবস্থার অবনতি হত, কেউ আবার সেরে উঠতেন
এ বার এই সমস্যা মিটতে চলেছে। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে বসতে চলেছে রক্তের এলাইজা পরীক্ষার যন্ত্র। ‘স্টেট আর্বান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি’ বা সুদার পক্ষ থেকে খড়্গপুর পুরসভা এই যন্ত্র পেয়েছে। আপাতত বিদ্যাসাগর আবাসনে পুরসভার হেলথ পোস্টে ওই যন্ত্র রাখা হলেও তা চালু হয়নি। ঠিক হয়েছে, মহকুমা হাসপাতালে যন্ত্রটি বসানো হবে। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “সত্যি বলতে এই হাসপাতালে একটি এলাইজা পরীক্ষার যন্ত্রের প্রয়োজন রয়েছে। কারণ এখনও রক্তের নমুনা মেদিনীপুরে পাঠাতে হচ্ছে। এ বছর এখনও সে ভাবে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা না যাওয়ায় আগের তুলনায় দ্রুত রিপোর্ট পাচ্ছি।”
গত বছর থেকেই রেলশহরে কামড় বসিয়েছে ডেঙ্গি। সব মিলিয়ে জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচশো ছাড়িয়েছিল। তার মধ্যে শুধু খড়্গপুর শহরে প্রায় দু’শোজন মশাবাহী এই রোগের কবলে পড়েছিলেন। মেদিনীপুরে রক্ত পরীক্ষা করতে পাঠানোয় রিপোর্ট পেতে দেরি হচ্ছিল। চিকিৎসকদের মতে, রক্তের নমুনা একস্থান থেকে অন্য স্থানে পরীক্ষাগারে নিয়ে যাওয়ায় নির্ভুল রিপোর্ট পাওয়াও কঠিন। তাছাড়া দেরিতে রিপোর্ট পেলে অনুমানের ভিত্তিতে চিকিৎসা করতে হয়। তাতে ফল ক্ষতিকর হতে পারে।
খড়্গপুরে ডেঙ্গির প্রভাব বেশি হওয়ায় সুদার পক্ষ থেকে একটি এলাইজা পরীক্ষার যন্ত্র পুরসভাকে দেওয়া হয়। মাস খানেক আগে এই যন্ত্র নিয়ে আলোচনার সময় জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা যন্ত্রটি মহকুমা হাসপাতালে বসানোর আবেদন জানিয়েছিলেন পুরসভাকে। গিরীশচন্দ্রবাবু বলেন, “পুরসভা এই প্রস্তাবে রাজি হয়েছে। এতে অনেক কম সময়ে রিপোর্ট পাওয়া যাবে।’’
এ বছর এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা কম। তবে এখনও অবধি জেলায় যে ৬ জন আক্রান্তের খবর মিলেছে, তার মধ্যে ২ জন খড়্গপুরের বাসিন্দা বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু এখনও কেন ওই যন্ত্র মহকুমা হাসপাতালে বসানো হয়নি? পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “আমার সঙ্গে দিন দশেক আগে হাসপাতাল সুপারের কথা হয়েছিল। আমি ওঁদের একটি আবেদন করতে বলেছি। আবেদন করলেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এলাইজা যন্ত্র হস্তান্তর করে দেওয়া হবে।”