প্রতীকী ছবি
তরতরিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। পরিস্থিতি সামলাতে পশ্চিম মেদিনীপুরেই করোনা আক্রান্তের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হল। এই সংক্রান্ত রাজ্যের নির্দেশও জেলায় এসে পৌঁছেছে। ঠিক হয়েছে, শালবনি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালটি করোনা হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হবে। রাজ্য জানিয়েছে, এই হাসপাতালে করোনা আক্রান্তেরই চিকিৎসা হবে। এটি করোনা হাসপাতাল (লেভেল- ৪) হিসেবে কাজ করবে।
এত দিন জেলার করোনা আক্রান্তদের পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় বড়মা হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছিল। শালবনির করোনা হাসপাতাল চালু হলে আর তার প্রয়োজন পড়বে না। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল মানছেন, ‘‘শালবনির হাসপাতালটি কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত হচ্ছে। হাসপাতালটি লেভেল-৪ হিসেবে কাজ করবে। কোভিড পজ়িটিভ রোগীর চিকিৎসা এই হাসপাতালে হবে।’’ ইতিমধ্যে একাধিকবার হাসপাতালটি পরিদর্শন করেছে জেলা প্রশাসনের পরিদর্শক দল। সব দিক খতিয়ে দেখেছে দলটি। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী দু’-তিনদিনের মধ্যেই শালবনির এই হাসপাতালটি করোনা হাসপাতাল হিসেবে কাজ শুরু করবে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সব দিক দেখেই জেলায় এই চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। জেলার করোনা আক্রান্তকে চিকিৎসা করাতে আর দূরে যেতে হবে না। এতে রোগী ও তাঁর পরিজনেদের হয়রানিও কমবে। প্রশাসন সূত্রে খবর, শালবনির ওই হাসপাতালে ভেন্টিলেটর-সহ নানা পরিকাঠামো থাকবে। করোনা চিকিৎসার জন্য কী কী পরিকাঠামো প্রয়োজন, পরিদর্শক দল তাও দেখেছে। লেভেল-৪ হাসপাতালটি ১৫০টি শয্যার হবে। তবে আপাতত এখানে ৫০টি শয্যার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে আরও ১০০টি শয্যার ব্যবস্থা করা হবে।
বস্তুত, শালবনির ওই হাসপাতালকে করোনা হাসপাতালে রূপান্তরিত করা নিয়ে আগেই জেলাস্তরে আলোচনা শুরু হয়েছিল। কথা এগোচ্ছিল। গত বুধবার জেলার সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়, ‘‘শালবনির হাসপাতালটি আমরা নিচ্ছি।’’ এরপরই প্রশাসনিক মহলে তোড়জোড় শুরু হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরে আগেই দু’টি করোনা হাসপাতাল চালু হয়েছে। তবে সেখানে করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা হয় না। শুধু সন্দেহভাজনেরই চিকিৎসা হয়। শহরতলির খাসজঙ্গলে আয়ুষ হাসপাতালকে লেভেল-১ করোনা হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হয়েছে। আর মোহনপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালকে লেভেল-২ করোনা হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হয়েছে। সন্দেহভাজনদের মধ্যে যাঁদের উপসর্গ তুলনায় কম, তাঁদের লেভেল-১ হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হয়, আর যাঁদের উপসর্গ তুলনায় বেশি, তাঁদের লেভেল-২ হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হয়।
এতদিন তাই জেলার করোনা আক্রান্তকে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে হত বড়মা হাসপাতালে। এ বার তাঁরা যাবেন শালবনি কোভিড হাসপাতালে। করোনা হাসপাতালে রূপান্তরিত হচ্ছে, তাই শালবনি সুপার স্পেশ্যালিটিতে ভর্তি রোগীদের একে একে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। প্রায় ৩৫ জনকে স্থানান্তর করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সব দিক খতিয়ে দেখে যে যে পদক্ষেপ করার, সবই করা হচ্ছে।’’