দিদির জেলা সফরের ঠিক আগেই ভাইদের কোন্দল প্রকাশ্যে! মেদিনীপুর শহরে তৃণমূলের এই কোন্দল ঘিরে চরম অস্বস্তিতে দলের জেলা নেতৃত্বও মেদিনীপুর পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পুর-পারিষদ (পূর্ত) অনিলচন্দ্র দলবেরার বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ এনে ওই ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন যুব তৃণমূল নেতা সৌরভ বসু। ওয়ার্ড কমিটির সদস্যপদও ছেড়েছেন সৌরভ।
কেন পদত্যাগ?
সৌরভ বলেন, ‘‘ওয়ার্ড কমিটিতে থেকে কাজ করতে পারছিলাম না। কাউন্সিলর নিজের ইচ্ছে মতো সব কিছু করছেন। শুধু ওই কমিটিতে থেকে লাভ কী!’’ পরক্ষণে তাঁর সংযোজন, ‘‘পদত্যাগের আরও কিছু কারণ রয়েছে। যা জানানোর দলের নেতৃত্বকে জানিয়েছি। বঞ্চনা সহ্য করতে পারব না।’’ অনিলচন্দ্রবাবু অবশ্য বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বলেন, “কেউ যদি ওয়ার্ড কমিটিতে থাকতে না চায়, কী করা যাবে!”
কাল, সোমবার জেলা সফরে আসছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে মেদিনীপুর শহরের এ ঘটনায় চরম অস্বস্তিতে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বও। তবে তৃণমূলের মেদিনীপুর শহর তৃণমূলের সভাপতি আশিস চক্রবর্তীর, ‘‘ঠিক কী হয়েছে জানি না। খোঁজ নিচ্ছি। সমস্যা থেকে থাকলে আলোচনার মাধ্যমে নিশ্চয়ই তার সমাধান হবে।’’
পদাধিকার বলে ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি অনিলচন্দ্রবাবু। দলের এক সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতেই তাঁর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন সৌরভ। পদত্যাগপত্রে এই যুব নেতার দাবি, ওয়ার্ডের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম দেখাশোনা করার জন্য সর্বসম্মতিক্রমে তাঁকে ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদক মনোনীত করা হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত প্রথম দিন থেকেই তাঁর সঙ্গে কোনও প্রকার আলোচনা না করে কাউন্সিলর কাজ করে চলেছেন। বারবার বলা সত্ত্বেও কাউন্সিলর কর্ণপাত করেননি। যার ফলে তিনি মানসিক ভাবে অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছেন। সৌরভের আরও দাবি, গত পুর- নির্বাচনে অনিলচন্দ্রবাবুর জয় সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে তিনি প্রধান কান্ডারীর ভূমিকা পালন করেছেন। কিন্তু তাঁকে যোগ্য সম্মান দেওয়া থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তাই আর বিরোধ না বাড়িয়েই তাঁর এই পদত্যাগ।
মেদিনীপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল নতুন নয়। প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই একাধিক গোষ্ঠী রয়েছে। এ বার বিধানসভায় শহরে তৃণমূলের ভোট কমেছে। তবে কোন্দলে ছেদ পড়েনি। বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের বিজয় মিছিলেও সামনে এসেছে এই কোন্দল। তৃণমূলের শহর নেতৃত্বের দাবি, দলের মধ্যে কোনও কোন্দল নেই। হয়তো কোথাও কোথাও ভুল বোঝাবুঝি রয়েছে। তবে তা মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।