অদম্য: পাহাড়ে-জঙ্গলে অভিযানের প্রশিক্ষণ চলছে মেদিনীপুরে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
মানচিত্র দেখে পাহাড়ে-জঙ্গলে গন্তব্যে পৌঁছনোর উপায়, কোনও ব্যক্তি আহত হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পদ্ধতি পড়ুয়াদের হাতেকলমে শেখাতে প্রশিক্ষণ শিবির হচ্ছে মেদিনীপুরের জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ে। নবোদয় বিদ্যালয়ের বিহারের পটনার রিজিওনাল অফিসের নির্দেশে গত ১ মে থেকে শুরু হয়েছে সাতদিনের তৃতীয় ‘সোপান ট্রেনিং ক্যাম্প’। রাজ্যের ১৪টি জেলার ১৪টি স্কুলের ২১৪ জন ছাত্রছাত্রী ও ৩০ জন শিক্ষক যোগ দিয়েছেন শিবিরে।
গত ১ মে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিবিরের উদ্বোধন হয়। শিবিরের দ্বিতীয় দিনে ‘ম্যাপিং’ করার পদ্ধতি, মানচিত্র দেখে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছনোর উপায় হাতেকলমে শেখান রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত খড়গপুরের অর্পিতা কর্মকার। তৃতীয় দিনে শেখানো হয় ‘ফার্স্ট এইড’-এর পদ্ধতি। কোনও ব্যক্তি আহত হলে কী ভাবে তাঁর প্রথমিক চিকিৎসা করতে হবে তা শেখাতে বাঁকুড়া থেকে আসেন স্টাফ নার্স আন্না টিগ্গা।
ওই দিন বিকেলে ধ্যান ও যোগ নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আপৎকালীন সমস্যার মোকাবিলা করার উপায় শেখান ‘সিভিল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট’-এর প্রতিনিধিরা। আগুন লাগলে মোকাবিলার নানা পথ বাতলে দেন দমকলকর্মীরা।
শিবিরের পঞ্চম দিনে শেখানো হবে ‘হাইকিং’। অচেনা রাস্তা ধরে কী ভাবে পাহাড়, জঙ্গল পেরিয়ে অভিযান চালানো হবে দেওয়া হয় তারও প্রশিক্ষণ। সবকিছু হাতেকলমে শেখানোর জন্য ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে যাওয়া হবে গোপগড়ের জঙ্গলে। অচেনা রাস্তায় অভিযানে গেলে কী ভাবে নদী পেরোতে হবে, পাহাড়ে চড়তে হবে, রাস্তায় গাছ পড়ে থাকলে কী করতে হবে, জঙ্গলে কাঁটা গাছের মধ্য দিয়ে যেতে হলে, হিংস্র জন্তুর মুখোমুখি হলে বা রাস্তা হারিয়ে গেলে কী ভাবে পথ খুঁজে পাওয়া যাবে, শিবিরে শেখানো হচ্ছে সবই। শিবিরের শেষ দিনে ছাত্রছাত্রীদের হাতে শংসাপত্র তুলে দেওয়া হবে।
শিবিরে রয়েছেন ভারতীয় স্কাউট অ্যান্ড গাইড-র রাজ্য শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত সমর মিস্ত্রি। তিনি বলেন, ‘‘শিবিরে ছেলেমেয়েরা অনেক কিছু শিখতে পারবে।তাদের আত্মবিশ্বাসও বাড়বে।’’ শিবিরের আহ্বায়ক সোমনাথ বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রত্যেক বছরই আমাদের স্কুলে বিভিন্ন ধরনের শিবির হয়। সোপান ক্যাম্প-এ যোগ দিলে ছাত্রছাত্রীরা আনন্দও পাবে। ভবিষ্যতে সেই অভিজ্ঞতা কাজে আসবে।’’