ফলের পরে আক্রান্ত বিজেপি

বিজেপির অভিযোগ, নারায়ণগড়ের বেলদা স্টেশন সংলগ্ন তাদের কার্যালয় বৃহস্পতিবার রাতে দখল করে তৃণমূল। তালা লাগিয়ে তৃণমূলের পতাকা টাঙানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:০৩
Share:

বিজেপি অফিস দখল বেলদায়।

খড়্গপুর সদর বিধানসভা উপ নির্বাচনের ফলাফলের পর জেলার বিভিন্ন প্রান্তে আক্রান্ত হল বিজেপি। অভিযোগ, কোথাও ভাঙচুর করা হয়েছে কার্যালয়। কোথাও মারধর করা হয়েছে‌ বিজেপি কর্মী, সমর্থকদের।

Advertisement

বিজেপির অভিযোগ, নারায়ণগড়ের বেলদা স্টেশন সংলগ্ন তাদের কার্যালয় বৃহস্পতিবার রাতে দখল করে তৃণমূল। তালা লাগিয়ে তৃণমূলের পতাকা টাঙানো হয়। শুক্রবার সকালে আবার বিজেপি নেতৃত্ব তৃণমূলের পতাকা সরিয়ে নিজেদের পতাকা লাগিয়ে কার্যালয়টি ফের দখলে নেন। বিজেপির নারায়ণগড় মধ্য মণ্ডলের সভাপতি শুভাশিস মহাপাত্র বলেন, ‘‘খড়্গপুরের জয়ে অক্সিজেন নিয়ে রাতের অন্ধকারে দখলের রাজনীতি করছে তৃণমূল।’’ অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মিহির চন্দ বলেন, ‘‘স্টেশন সংলগ্ন কার্যালয়টি রেলের জায়গায় আছে। ওটা সিপিএমের শ্রমিক সংগঠনের কার্যালয় ছিল। লোকসভা নির্বাচনের পর বিজেপি তা দখল করে। ওরাই দখলের রাজনীতি শুরু করে।’’

নারায়ণগড়ের মকরামপুর, গ্রামরাজ, কুনারপুর, পাকুড়সেনীতে বিক্ষিপ্ত গন্ডগোল হয়েছে। অভিযোগ, বিরবিরাতে বিজেপি কার্যালয়ে ভাঙচুর হয়। মারধর করা হয় বুথ সভাপতি অরুণ দোলাই-সহ কয়েকজনকে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পাকুড়সেনিতেও বিজেপি কর্মীর বাড়িতে হামলা হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

দাঁতনেও মারধর ও ভাঙচুর হয়েছে। অভিযোগ, বাঁশকোনির বুথ সভাপতি মানু ঘোড়াইকে মারধর করা হয়। অভিযোগ, বামনবিরুয়া, ষটরং এলাকায় কয়েকজনকে মারধর করেছে তৃণমূলের লোকজন। দাঁতনের বিজেপি নেতা মোশাফ মল্লিক বলেন, ‘‘রাতে কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। মারধরে আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।’’ অভিযোগ মানেনি তৃণমূল। দাঁতন ১ ব্লক তৃণমূলের সহ সভাপতি প্রতুল দাসের বক্তব্য, ‘‘খড়্গপুরে হেরে মিথ্যে অভিযোগ করছে বিজেপি। দাহাড়দায় ওরাই আমাদের মারধর করেছে।’’

বিক্ষিপ্ত অশান্তি চলছে ঘাটাল মহকুমা জুড়ে। বিজেপির অভিযোগ, ঘোলসাইয়ে তাদের পার্টি অফিসে হামলা হয়েছে। অমরপুর ও মারিচ্যায় বিজেপি কর্মীদের ঘিরে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। দাসপুরের নাড়াজোলও উত্তপ্ত। দানিকোলায় বিজেপির কয়েকজনকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। চন্দ্রকোনার পলাশচাবড়িতেও বিজেপি কর্মীদের ঘিরে হুমকি ও মারধরের অভিযোগ ওঠে। বিজেপির অভিযোগ, বৃহস্পতিবার ফলপ্রকাশের পর তাদের পতাকা ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে। পতাকা পোড়ানোও হয়। প্রতিবাদে মিছিল করেছে বিজেপি। বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “ঘাটাল, দাসপুরে আমাদের কর্মীদের মারধর, পার্টি অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে।’’ তৃণমূলের ঘাটাল ব্লক সভাপতি দিলীপ মাঝি বলেন, “আশঙ্কা থেকেই উল্টোপাল্টা কথা বলছে ওরা।”

বিজেপির গোয়ালতোড় দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি অনিরুদ্ধ দে'র অভিযোগ, ‘‘বৃহস্পতিবার রাতে কিয়ামাচায় বিজেপির বুথ সভাপতি স্বরূপ ঘোষের বাড়িতে বোমাবাজি করা হয়। খড়ের গাদায় আগুন লাগানোর চেষ্টা হয়।’’ গোয়ালতোড় উত্তর মণ্ডলের সভাপতি উজ্জ্বল হাটুই বলেন, ‘‘দোলবাগান-সহ কয়েকটি স্থানে বিজেপি কর্মীদের হুমকি দিয়ে মোটা টাকা দেওয়ার চাপ দেওয়া হচ্ছে।’’ গড়বেতা মধ্য মণ্ডলের সভাপতি তন্ময় দোগরির অভিযোগ, ‘‘খড়িকাশুলিতে বিজেপির সক্রিয় কর্মী গৌরচন্দ্র রুইদাসের মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়, গোপালশোলে বিজেপির মহিলা কর্মীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’’ একই অভিযোগ চন্দ্রকোনা রোড ব্লক এলাকাতেও। সব অভিযোগ উড়িয়ে জেলা তৃণমূল নেতা নির্মল ঘোষ বলেন, ‘‘বিজেপি মিথ্যা কথা বলে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। ’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement