খড়্গপুরে রাম মন্দিরের সামনে সিসি ক্যামেরা বসিয়েছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
কাল, বুধবার অযোধ্যায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠার ভূমি পুজো। তবে ওই দিন এ রাজ্যে সম্পূর্ন লকডাউন। তার মধ্যেই অবশ্য রাজ্য সভাপতির ‘খাসতালুক’ রেলশহর খড়্গপুরে মন্দিরে গিয়ে বিশেষ পুজো-পাঠের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিজেপি। পাল্টা সজাগ প্রশাসনও। ফলে, রেলশহরের সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
রামমন্দিরের ভূমি পুজো উপলক্ষে ৫ অগস্ট রাজ্যে লকডাউনের দিন পরিবর্তনের আর্জি আগেই জানিয়েছিল বিজেপি। ওই দিন লকডাউন হলে ‘রাজ্য সরকারকে ফল ভুগতে হবে’ বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কাল, বুধবারের লকডাউন বাতিল হয়নি। ফলে, বিধি ভেঙেই রেলশহরের মন্দিরে-মন্দিরে পুজোর প্রস্তুতি শুরু করেছে বিজেপি। পাশাপাশি বিভিন্ন কমিউনিটি হল ভাড়া নিয়ে যজ্ঞ হবে।
খড়্গপুরের বাসিন্দা বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায় বলছেন, “রামমন্দির প্রতিষ্ঠা ভারতীয়দের গর্বের দিন। ওই দিন আমরা ভূমি পুজোয় শামিল হতে খড়্গপুরের বিভিন্ন রামমন্দির, বজরং মন্দির ও হল ভাড়া করে যজ্ঞ-পুজোর আয়োজন করছি। লকডাউন থাকলেও পুজোর সঙ্গে আপস করব না। সামাজিক দূরত্ব ও করোনা বিধি মেনেই পুজোয় যোগ দেব।”
প্রশাসন অবশ্য কাল, বুধবার লকডাউন কার্যকর করতে জোর প্রস্তুতি শুরু করেছে। সোমবার থেকেই গোলবাজার রামমন্দির, ট্রাফিক বজরং মন্দির, ইন্দার ঠাকুরচক, আজাদবস্তির শিবমন্দির, মাছবাজারের শিবমন্দির-সহ বিভিন্ন মন্দিরের সামনে সিসিটিভি ক্যামেরা বসাচ্ছে পুলিশ। খড়্গপুরের মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেন, “রাজ্যের ঘোষিত লকডাউনে ব্যাঙ্ক, হাসপাতাল-সহ কয়েকটি জরুরি পরিষেবায় ছাড় রয়েছে। তবে কোনও ধর্মীয় বা রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করা যাবে না। এ সব কারণে কেউ পথে বেরিয়ে লকডাউন ভাঙলে আমরা কড়া ব্যবস্থা নেব।” খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদও বলেন, “শহরের আইনশৃঙ্খলা বজায়ে বিভিন্ন এলাকার সঙ্গেই কয়েকটি মন্দিরে সিসিটিভি বসানো হয়েছে। কেউ লকডাউন ভাঙলে আমরা বরদাস্ত করব না।”
এই আবহে অশান্তির আশঙ্কা ঘনাচ্ছে রেলশহরে। অতুলমণি স্কুলের সামনে বিেজপির একটি ফ্লেক্স ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষারের দাবি, “খড়্গপুর টাউন পুলিশ তো রামমন্দির-সহ বিভিন্ন মন্দিরের পুরোহিতদের হুমকি দিচ্ছে। সিসিটিভি বসাচ্ছে। কিন্তু এ ভাবে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না। আমরা পুজোর দিতে মন্দিরে যাবই।” সেই মতোই প্রস্তুতি চলছে গেরুয়া শিবিরে। বিজেপির দলীয় সূত্রে খবর, মালঞ্চ এলাকার কয়েকটি কমিউনিটি হল, হনুমান মন্দিরের সামনে পুজোর জন্য বিজেপির কর্মীরা জড়ো হবেন। বিজেপির জেলা নেতা অভিষেক অগ্রবাল বলেন, “রাজ্যের সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই লকডাউন ঘোষণা করেছে। আমরা দেশের পাঁচশো বছরের রামমন্দির প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে খাটো করতে দেব না।”
পাল্টা সুর চড়াচ্ছে তৃণমূলও দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “এই রাজ্যের সরকার যখন করোনা পরিস্থিতির সফল মোকাবিলা করছে তখন বিজেপি লকডাউন ভাঙার পরিকল্পনা করে পরিস্থিতি জটিল করছে। মানুষ মেনে নেবে না।”