প্রতীকী ছবি।
ফের এক আলু চাষির অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে শোরগোল পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। গড়বেতা-৩ ব্লকের রসকুণ্ডুর শাউলিয়ায় মৃতের নাম সহদেব নন্দী (৫৬)।
গত শুক্রবার কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যালে এনে ভর্তি করা হয়। রবিবার বিকেলে মেডিক্যালেই মারা যান তিনি। সোমবার দেহের ময়না তদন্ত হয়েছে। সহদেববাবু এ বার প্রায় বিঘা চারেক জমিতে আলু
চাষ করেছিলেন।
সহদেববাবুর ছেলে প্রদীপ্ত নন্দীর দাবি, “বাবা আলু চাষের জন্য ঋণ নিয়েছিলেন। ফসলের দাম মেলেনি। ঋণ শোধের জন্য মহাজনেদের তাগাদা আসাও শুরু হয়েছিল। ঋণ শোধ করতে না- পারায় উনি অবসাদে ভুগছিলেন। সেই থেকেই এই ঘটনা।” যদিও মৃতেরা পরিজনেরা এই মর্মে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “ওই এলাকায় একজন কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তবে কী কারণে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তা বলা কঠিন।”
আলু তুলে নেওয়ার পরে এখন জমিতে তিল চাষ শুরু হয়েছে। গত শুক্রবার দুপুরে বাড়ির লোকজন তিল খেতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে একা ছিলেন সহদেববাবু। তখনই তিনি কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আলু চাষের জন্য ঠিক কত টাকা ঋণ নিয়েছিলেন সহদেববাবু? প্রদীপ্ত বলেন, “৯০ হাজার টাকার মতো হবে।” সহদেববাবুর পরিজনেদের দাবি, শুরুতে আলুর দাম ছিল না। পরে হিমঘরে আলু রেখেও দাম মেলেনি। তাই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন সহদেববাবু।
পশ্চিম মেদিনীপুরে আলু চাষির অস্বাভাবিক মৃত্যু এই প্রথম নয়। গত মার্চের গোড়ায় দিলীপ হাতি নামে এক চাষির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় চন্দ্রকোনার ঝাঁকরার ভাটপাড়ায়। পরিজনেদের দাবি ছিল, আলুতে দাম না পেয়ে মনমরা হয়ে ছিলেন দিলীপবাবু। দাম ছিল না বলে মাঠেই আলু পড়েছিল। চাষের জন্য ধারদেনাও করেছিলেন।
মার্চেই স্বপন হাজরা নামে এক চাষির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় কেশপুরের আনন্দপুরের বেউচ্যাবাঁধিতে। তাঁর পরিজনেদের দাবি ছিল, আলু চাষ করার জন্য তিনি একাধিকজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। ঋণ শোধ করতে না পেরেই কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেন স্বপনবাবু। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার অবশ্য বক্তব্য, “শুরুতে হয়তো আলুর দাম একটু কম ছিল। পরে দাম বেড়েছে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার পিছনে অনেক সময়ে পারিবারিক অশান্তিও থেকে থাকে।”