প্রতীকী ছবি
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুরে গণ্ডিবদ্ধ এলাকার সংখ্যাও বেড়ে গিয়েছিল কয়েকদিন আগে। তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের দুই এলাকা, এগরা শহর ও হলদিয়ার একাধিক জায়গা মিলিয়ে জেলায় গণ্ডিবদ্ধ এলাকা বেড়ে হয়েছিল ৮টি। হলদিয়ার বাজিতপুর, টাউনশিপ ও শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বল্লুক-১ পঞ্চায়েতের পাঁচবেড়িয়া এলাকায় নতুন করে করোনা আক্রান্তের হদিস মেলার পর এক ধাক্কায় গণ্ডিবদ্ধ এলাকার সংখ্যাও বেড়েছিল। কিন্তু করোনা আক্রান্তদের অধিকাংশই সুস্থ হয়ে ওঠায় এবং সংক্রামিত এলাকায় টানা ১৪ দিন নতুন কেউ আক্রান্ত না হওয়ায় গণ্ডিবদ্ধ এলাকার সংখ্যা কমানো হয়েছে। বর্তমানে সেই সংখ্যা মাত্র ৩টি।
হলদিয়ার টাউনশিপ, বাজিতপুর ও তমলুকে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের পাঁচবেড়িয়া এখনও গণ্ডিবদ্ধ তালিকায়। অন্যদিকে এগরা শহর, হলদিয়ার দুর্গাচক, পাথরবেড়িয়া এবং আশদতলিয়া, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের মেচেদা আরপিএফ ব্যারাক সংলগ্ন এলাকা ওই তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, গণ্ডিবদ্ধ এলাকার সংখ্যা কমে আসার পাশাপাশি হলদিয়ায় আসা করোনা আক্রান্ত এক ট্রাকচালক এবং হলদিয়ার বাজিতপুর এলাকার মুদি দোকানদার এক বৃদ্ধ পাঁশকুড়া করোনা হাসপাতালে চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে রবিবার ছাড়া পেয়েছেন। ফলে জেলায় এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত ৩৬ জনের মধ্যে ২৯ জনই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন। মারা গিয়েছেন একজন। আর ৬ জন চিকিৎসাধীন। বাজিতপুরের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধের নমুনা পরীক্ষায় গত সোমবার করোনা আক্রান্ত জানার পরেই তাঁকে পাঁশকুড়ার করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ওই বৃদ্ধের সংস্পর্শে আসা তাঁর পরিবারের আরও পাঁচ সদস্য করোনা আক্রান্ত হওয়ায় তাঁদেরও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
করোনা আক্রান্ত শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বল্লুক-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা ব্যাঙ্ককর্মী মহিলার পরিবারের সদস্য-আত্মীয় মিলে ৭ জন ও মহিলার কর্মস্থলের ১২ জন আধিকারিকের নমুনা পরীক্ষায় সকলের করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। উল্লেখ্য, ওই মহিলা মোটর সাইকেলে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন। তাঁকে প্রথমে মেচেদার একটি নার্সিংহোমে ও পরে কলকাতায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে অস্ত্রপচারের আগে তাঁর নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায়। মহিলার সংস্পর্শে আসা পরিবারের সদস্য ও আত্মীয় মিলিয়ে ৭ জনকে চণ্ডীপুর করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ব্যাঙ্ক কর্মী ও নার্সিংহোম কর্মীদের হোম কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়। তবে সকলেরই করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘হলদিয়ায় আসা বিহারের এক ট্রাকচালক ও বাজিতপুর গ্রামের এক বৃদ্ধ ব্যবসায়ী চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে করোন মুক্ত হয়েছে। দু’জনকেই ১৪ দিনের গৃহ পর্যবেক্ষণে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেচেদার ব্যাঙ্ক কর্মীর পরিবারের সদস্য ও ব্যাঙ্ক-কর্মী আধিকারিকদের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে খবর, করোনায় আক্রান্তের চিকিৎসার পাশাপাশি আক্রান্তদের চিহ্নিত করার জন্য জেলায় আরও কয়েকটি জায়গায় নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্র খোলা হচ্ছে। জেলায় এখন মোট ১৭ টি নমুনা সংগ্রহ চালু হয়েছে। এগরা-১ ও এগরা-২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্র চালু করা হবে।