নাবালিকা শিল্পীকে গাড়িতেই নির্যাতন

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর পটাশপুর-২ ব্লকের প্রতাপদিঘি এলাকায় গত কয়েক বছরে স্কুলছাত্রী এবং যুবকদের নিয়ে কয়েকটি নাচের দল গড়ে উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পটাশপুর শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:২৫
Share:

প্রতীকী ছবি

অনুষ্ঠান সেরে রাতে বাড়ি ফেরার পথে গাড়িতে এক নাবালিকা নৃত্যশিল্পীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠল দলের মালিকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত নিশিকান্ত ভুঁইয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। রবিবার রাতে পটাশপুরে সামন্তখন্ড এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তের বাড়িও ওই গ্রামে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর পটাশপুর-২ ব্লকের প্রতাপদিঘি এলাকায় গত কয়েক বছরে স্কুলছাত্রী এবং যুবকদের নিয়ে কয়েকটি নাচের দল গড়ে উঠেছে। গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশনের পাশাপাশি বিভিন্ন হিন্দি ও বাংলা ছায়াছবির গানের তালেও ওই শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করে থাকে। বিভিন্ন উৎসব ও অনুষ্ঠানে এই ধরনের নাচের দলের চাহিদা থাকে এলাকায়। ইতিমধ্যেই এই ধরনের নৃত্যানুষ্ঠান জনপ্রিয়ও হয়েছে।

অভিযোগ রবিবার রাতে এরকমই একটি নাচের দল পশ্চিম মেদিনীপুরের খাকুড়দায় অনুষ্ঠান করতে গিয়েছিল। অনেক রাতে অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর শিল্পীদের নিয়ে প্রতাপদিঘিতে ফেরার উদ্দেশ্যে গাড়িতে রওনা দেন দলের মালিক। পথে একাধিক জায়গায় অন্য শিল্পী এবং তাদের অভিভাবকদের নামিয়ে দেওয়ার পর গাড়িতে একাই ছিল ওই নাবালিকা। অন্যদিন তার সঙ্গে অভিভাবক থাকলেও ওইদিন কোনওকারণে বাড়ির কেই যেতে পারেননি। তা ছাড়া নাচের দলের মালিক ও নাবালিকার বাড়ি একই এলাকায় হওয়ায় মালিকই তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেবেন এমন ভরসা করেছিলেন নাবালিকার বাড়ির লোকজন। নাবালিকা জানিয়েছে, ওই দিন ফেরার সময় সকলে নেমে যাওয়ার পর সে ও দলের মালিক মিলিয়ে গাড়িতে তারা দু’জন ছিল। তার অভিযোগ, গাড়িতে আর কেউ না থাকার সুযোগে দলের মালিক তাকে নিশিকান্ত ভুঁইয়া তাকে যৌন নির্যাতন করে। রাতে বাড়ি ফিরে সে বাড়ির লোকজনকে সব জানায়। রবিবার রাতেই নিশিকান্তর বিরুদ্ধে নাবালিকার পরিবার যৌন নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ পেয়েই নিশিকান্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তর বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলাও রুজু করা হয়েছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, পটাশপুরে এই ধরনের নাচের দলের সংখ্যা অনন্ত ১৪টি। প্রতিটি দলে সাত থেকে আটজন কিশোরী থেকে তরুণী নৃত্যশিল্পী থাকে। অভিযোগ ওই কিশোরীদের অধিকাংশই স্কুলছাত্রী এবং গরিব পরিবারের। কেমন করে এরা নাচের দলের সঙ্গে যুক্ত হয়? একটি নাচের দলের ম্যানেজার জানান, আগে বাড়ির অভিভাবকদের বোঝানো হয়। তাঁরা রাজি হলে তবে মেয়েদের দলে নেওয়া হয়। তা ছাড়া মেয়েদের নিরাপত্তার জন্য কোনও অনুষ্ঠানে বাইরে যেতে হলে মেয়েদের সঙ্গে তাঁদের একজন অভিভাবক যান। মূলত টাকা রোজগারের জন্যই গরিব পরিবারের মেয়েরা নাচের দলে ঢোকে। তবে নাচকে ভালবেসেও দলে এসেছে এমনও অনেকে আছে।

আক্রান্ত নাবালিকার পরিবার জানান, বিশ্বাস করে মেয়েকে অনুষ্ঠানে ছেড়েছিলাম। কিন্তু নাচের মালিক যে কাজ করেছে তার জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তাঁরা। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় নাচের দলগুলি ঠিক কী ধরনের অনুষ্ঠান করে সে বিষয়ে দলগুলির উপর নজরদারির ব্যবস্থা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement