বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে গড়ে তুলতে চান, বোলপুরের সেই শিবপুর মৌজার জমি মঙ্গলবার ঘুরে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জয়দেবে বাউল উৎসবের অনুষ্ঠান সেরে এ দিন তিনি দুই মন্ত্রী— চন্দ্রনাথ সিংহ এবং ফিরহাদ হাকিমকে নিয়ে চলে যান শিবপুরে। সঙ্গে ছিলেন হিডকো-র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন, রাজ্যের উচ্চশিক্ষা সচিব বিবেক কুমার এবং পুর ও নগরোন্নয়ন সচিব ওঙ্কারসিংহ মিনা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পর্যটনের দিক থেকে বোলপুর-শান্তিনিকেতনের গুরুত্ব অনেক। তাই লাগোয়া এলাকাতেও উন্নয়ন হচ্ছে। তারই অংশ—শিবপুর মৌজায় এই কর্মকাণ্ড। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশ-বিদেশের ছাত্রছাত্রীরা আসবে।’’
গত শনিবার কলকাতায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে অধ্যাপক কনভেনশনে বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার কথা প্রথম ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য চিহ্নিত জমিটি রয়েছে শিবপুর মৌজায়, যেখানে শিল্প-তালুক গড়বে জানিয়ে ২০০১-এ প্রায় ৩০০ একর জমি নিয়েছিল রাজ্য। সেখানে ১৩১ একর জমিতে ইতিমধ্যেই ‘গীতবিতান’ থিম-সিটি, ৫০ একরে ‘বিশ্ব ক্ষুদ্র বাজার’ (কুটির শিল্পের জন্য) ও ১০ একরে আইটি-হাব গড়ছে তৃণমূল সরকার। ঠিক হয়েছে, শিবপুরে ওই থিম-সিটির পাশে প্রায় ২০ একর জমিতে বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে। হিডকো তার নকশা তৈরি করছে। জয়দেবের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী খোলসা করেন ‘গীতবিতান’ থিম-সিটি গড়ার কারণ। বলেন, ‘‘অনেকেই শান্তিনিকেতনে থাকতে চায়। পারে না। প্রান্তিক কবে হয়ে গিয়েছে। কেউ সেখানে জায়গা পেয়েছে। কেউ পায়নি। তাই গীতবিতান সিটি হোক।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘গীতবিতান সিটির মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হবে। বিশ্বভারতীর কায়দায়, প্রকৃতির সঙ্গে সমন্বয়ের রাবীন্দ্রিক আদর্শেই ওই বিশ্ববিদ্যালয় গড়া হবে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন দত্ত। তবে শিবপুরের জমিদাতাদের একাংশ এখনও চান, সেখানে শিল্পই হোক। হাসিবুদ্দিন খান, ইউসুফ শেখ, বাবুল হাঁসদা, দিপালী সাহাদের মতো জমিদাতারা বলছেন, ‘‘শিল্প গড়তে জমি দিয়েছি। শিল্প হলে চাকরি হবে। এলাকার উন্নতি হবে। এটা আর কী ভাবে বললে সরকার বুঝবে?’’