বিবেক দুবে। —ফাইল চিত্র।
বিরোধী দলগুলি সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর দাবি তুলেছে ঠিকই। তবে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে এখনও রাজ্য পুলিশের উপরে আস্থাশীল। যদিও নির্বাচন কমিশনের কাছে তিনি অতিরিক্ত বাহিনী চেয়ে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। কমিশন তা বিবেচনা করছে।
বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষক মনে করেন, যদি জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের সাহায্য নিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও সেনাবাহিনী উগ্রপন্থা দমনের অভিযান চালিয়ে যেতে পারে, তা হলে রাজ্যের পুলিশ দিয়েও অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট করানো সম্ভব। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম দু’দফায় যে-সব লোকসভা কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে, সেখানকার পুলিশ অফিসারদের আমি অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করছি। আশা করছি, রাজ্য পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের যে-অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা এ বার তা দূর করবেন। সুন্দর নির্বাচন করিয়ে দেখিয়ে দেবেন, রাজ্য পুলিশও অবাধ ভোট করাতে সক্ষম।’’
বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষকের বক্তব্য, একটি বাহিনীর সকলেই খারাপ হতে পারেন না। অনেকেই সুযোগ পেলে নিরপেক্ষ ভূমিকা দেখাতে সক্ষম। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি রাজ্য সশস্ত্র পুলিশও এ বার সেই ভূমিকা দেখাবে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তবে তার পরেও অবাধ ভোটের জন্য আরও বাহিনী প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষক। তিনি নির্বাচন কমিশনকে আরও বাহিনীর প্রয়োজনের কথা জানিয়েছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় যে-সব কেন্দ্রের ভোট হবে, এ দিন শিলিগুড়িতে সেখানকার সাধারণ পর্যবেক্ষক, পুলিশ-পর্যবেক্ষক এবং ব্যয় পর্যবেক্ষকের সঙ্গে কথা বলেন দুবে। প্রত্যেকের কাছেই সংশ্লিষ্ট এলাকার পরিস্থিতি জেনে নেন তিনি। সন্ধ্যায় কলকাতায় ফিরে এসেছেন দুবে। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডেরও বিশেষ পর্যবেক্ষক তিনি। সেখানেও তাঁর সফর শুরু হবে। এর আগে রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র এবং এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) সিদ্ধিনাথ গুপ্তকেও ভোটের সময় বিরোধী দলের উপরে হামলার অভিযোগ বা রাজনৈতিক মারামারি ঠেকাতে পুলিশ কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দুবে।
কমিশন সূত্রের খবর, জঙ্গলমহলে থাকা ৩৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাওয়া গেলে আলিপুরদুয়ার-কোচবিহারে অন্তত ৩০ শতাংশ বুথে তাদের রেখে ভোট হবে। বাকি বুথে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুলিশ নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে। তবে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো যাঁরা জ়েড-প্লাস ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পান, রাজ্যে তাঁদের সভা রয়েছে। প্রতিটি থানা এলাকাতেই ভোটের জন্য রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়েছে। ফলে টান থাকবে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশেরও। বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষক অবশ্য রাজ্য পুলিশের উপরে আস্থা হারাতে রাজি নন। তাঁর মতে, কোনও রাজ্যেই রাজ্য পুলিশকে বাদ দিয়ে ভোট সম্ভব নয়। পুলিশের সামনে এ বার নিজেদের নষ্ট হওয়া ভাবমূর্তি ফেরানোর সুযোগ এসেছে বলে মনে করেন দুবে।