নির্বাচনের মুখে চা বাগান নিয়ে আন্দোলনে বিজেপি

লোকসভা নির্বাচন কাছে আসতেই চা বলয় অধ্যুষিত আলিপুরদুয়ার জেলায় নানা ভাবে বাগান শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে মরিয়া শাসক-বিরোধী দুই শিবিরই। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার কারণে মাইকের ব্যবহার বন্ধ থাকলেও জন সংযোগ বাড়াতে বাগানে বাগানে ছুটছেন তৃণমূলের নেতারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৯ ০৫:১৫
Share:

বৈঠকে: জন বার্লা ও গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। নিজস্ব চিত্র

লোকসভা নির্বাচনের আগে চা বাগান সমস্যা নিয়ে আচমকাই সরব হলেন বিজেপির শ্রমিক নেতারা। প্ল্যান্টেশন অ্যাক্ট, ১৯৫১-তে সংশোধন আনার পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের আলোচনায় বসারও দাবি তুলেছে তারা। বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার ও একটি বেসরকারি চা বাগান কর্তৃপক্ষ কর্তৃপক্ষ একযোগে শ্রমিকদের পরোক্ষ ভাবে ‘খুন’ করছে। বিষয়টি নিয়ে ভোটের আগেই আন্দোলনে নামার পাশাপাশি ব্যাপক প্রচারে নামার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন তারা।

Advertisement

লোকসভা নির্বাচন কাছে আসতেই চা বলয় অধ্যুষিত আলিপুরদুয়ার জেলায় নানা ভাবে বাগান শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে মরিয়া শাসক-বিরোধী দুই শিবিরই। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার কারণে মাইকের ব্যবহার বন্ধ থাকলেও জন সংযোগ বাড়াতে বাগানে বাগানে ছুটছেন তৃণমূলের নেতারা। মূলত তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর একের পর এক চা বাগান খোলা ও গত কয়েক মাসে চা বাগান শ্রমিকদের জন্য সরকারের নানা কর্মসূচি নিয়েই প্রচার চালাচ্ছেন তারা। এই অবস্থায় পাল্টা বাগান শ্রমিকদের সমস্যাগুলিকে তুলে ধরে নির্বাচনের আগে আন্দোলনে নামতে চাইছেন তারা৷ এবং সেই প্রচারে বাগান সমস্যা সমাধানে প্ল্যান্টেশন অ্যাক্ট, ১৯৫১-তে সংশোধনের পাশাপাশি কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্য সরকারের আলোচনায় বসার দাবিও তুলছে তারা।

বিজেপির চা শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ানের চেয়ারম্যান জন বার্লার অভিযোগ, ২০০১ সাল থেকে একটি বেসরকারি বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের উপরে অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। পরোক্ষে তাদের ‘খুন’ করছে। গত দুই মাস ধরে তাদের মজুরি হচ্ছে না। অথচ, রাজ্য সরকার সেই সংস্থার কর্তৃপক্ষকেই সমর্থন জানিয়ে আসছে। জন বার্লার দাবি, অন্য অনেক চা বাগানেও শ্রমিকরা প্রচণ্ড সমস্যার মধ্যে রয়েছেন।

Advertisement

ন্যূনতম মজুরি তো দূরের কথা, বহু বাগানে শ্রমিকরা সরকার নির্ধারিত মজুরিও পাচ্ছেন না। এই অবস্থায় প্ল্যান্টেশন অ্যাক্ট, ১৯৫১-তে সংশোধন আনার দাবি তোলেন তিনি। তাঁর কথায়, ওই আইনে অনেক বিষয় মালিকের পক্ষে ও শ্রমিকের বিরুদ্ধে রয়েছে। তাই আইনটি বদলানো প্রয়োজন।

কিন্তু তৃণমূল নেতাদের পাল্টা যুক্তি, ওই আইনটি তো কেন্দ্রের। আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপি যদি সত্যিই আইনের বদল চায়, তা হলে কেন্দ্র তা করছে না কেন?

যার উত্তরে জন বার্লা দাবি করেন, তাঁরা ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের কাছে বিষয়টি নিয়ে দাবি রেখেছেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে রাজ্যেরও উচিত বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনায় বসা। বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা হতে দেরি নেই।

কিন্তু তা বলে বাগান শ্রমিকদের নিয়ে বিজেপির আন্দোলন থামবে না। খুব শীঘ্রই বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কাছে যাওয়া হবে।

যার উত্তরে তৃণমূলের এক জেলা নেতা বলেন, ‘‘বিজেপি বা কেন্দ্রীয় সরকার যে শ্রমিকদের পাশে নেই, তা সম্প্রতি ময়নাগুড়িতে প্রধানমন্ত্রীর মিথ্যা ভাষণে আরও একবার পরিস্কার হয়ে গিয়েছে। যা বিজেপির জেলা নেতারাও বুঝে গিয়েছেন। তাই এসব বলে যতটা সম্ভব চা বলয়ের মাটি আকড়ে পড়ে থাকতে চাইছেন তারা। কিন্তু তাতে কোন লাভ হবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement