আজ উদ্বোধন এই গ্যালারির। নিজস্ব চিত্র।
জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে রবীন্দ্রভারতী প্রদর্শশালার নবতম সংযোজন আমেরিকান গ্যালারি। আজ শনিবার, এই গ্যালারির উদ্বোধন করবেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, কলকাতার মার্কিন কনসাল জেনারেল হেলেন লাফেভ প্রমুখ। গ্যালারিটি সবার জন্য খুলে দেওয়া হবে আগামী মঙ্গলবার থেকে।
মাত্র ১২ বছর বয়সে বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিনের আত্মজীবনের মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে আমেরিকার পরিচয় ঘটেছিল। তারও চার দশক পরে সে দেশে রবীন্দ্রনাথের প্রথম পদার্পণ। যোগাযোগ ঘটেছিল ইলিনয়েস বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে। ১৯০৬-এ রথীন্দ্রনাথকে উচ্চশিক্ষার জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিলেন তিনি।
১৯১২-১৩, ১৯১৬-১৭, ১৯২০-২১, ১৯২৯ এবং ১৯৩০— মোট পাঁচ বার আমেরিকা গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। কাটিয়ে ছিলেন ১৭ মাস। এই সময় আমেরিকাকে চেনাজানার সুযোগ হয়েছিল তাঁর। অনেক মার্কিনিও রবীন্দ্রনাথের ভাবনার সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলেন। সেই পরিচয়ের নানা নিদর্শন নিয়েই গড়ে উঠেছে রবীন্দ্রনাথ ও আমেরিকা শীর্ষক এই গ্যালারি। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভাস্কর সেনগুপ্ত জানালেন, মার্কিন সরকার এই গ্যালারিটির জন্য ১৪ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা দিয়েছে।
১৯১২-১৩-এ রবীন্দ্রনাথ যখন প্রথম আমেরিকায় গিয়েছিলেন। ঠিক সেই সময়ের আবহ তৈরি করতে গ্যালারির প্রথমাংশ ‘পিরিয়ড রুম’ সেই সময়ের মতো সাজানো হয়েছে। এখানে রাখা হয়েছে সেই সময়ের বেশ কিছু আসবাবের প্রতিরূপ। দেওয়ালে রয়েছে শৌখিন ওয়াল পেপার, ফায়ার প্লেসে নকল আগুন। ছবির ফ্রেমগুলিও সাবেক। আর্বানায় রবীন্দ্রনাথ যে বাড়িটিতে ছিলেন সেই বাড়িটির প্রবেশ পথের অনুকরণে তৈরি হয়েছে এই গ্যালারির প্রবেশপথ। এই বাড়িতেই শুরু হয়েছিল রথীন্দ্রনাথ ও প্রতিমা দেবীর নতুন সংসার।
প্রদর্শশালার অধ্যক্ষ ইন্দ্রাণী ঘোষ বলছিলেন, “প্রচলিত গ্যালারির চেয়ে একটু আলাদা করে গড়ে তুলতেই এই উদ্যোগ। আলোকচিত্র, চিঠির প্রতিলিপি, মূর্তি ইত্যাদি দিয়ে তুলে ধরা হয়েছে রবীন্দ্রনাথের আমেরিকা সফরের নানা দিক। ১৯১৬-১৭-এ রবীন্দ্রনাথের দ্বিতীয় বার আমেরিকা সফরের নানা তথ্য পাওয়া যাবে তৎকালীন মার্কিনি সংবাদপত্রের ক্লিপিংস-এ। পাঁচ বার আমেরিকা সফরে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ বেশ কিছু বক্তৃতা দিয়েছিলেন। গ্যালারিতে সে বিষয়েও রয়েছে নানা তথ্য। এর পাশাপাশি আমেরিকায় যে সব মনীষীদের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের যোগাযোগ ছিল তাঁদের কথাও এখানে তুলে ধরা হয়েছে।”