প্রতীকী ছবি।
গৃহবধূকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার ঘটনায় স্বামী এবং ননদকে দোষী সাব্যস্ত করে দু’বছরের কারাদণ্ড দিল আদালত। বৃহস্পতিবার শিয়ালদহের স্মল কজেস কোর্টের বিচারক আনন্দশঙ্কর মুখোপাধ্যায় অভিযুক্ত স্বামী অরিন্দম ভট্টাচার্য এবং ননদ মৌসুমী চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ওই সাজা ঘোষণা করেন। তবে গৃহবধূর শাশুড়িকে সব অভিযোগ থেকে মুক্ত করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ২০১০ সালের পাঁচ অক্টোবর কাশীপুর রোডের বাড়ি থেকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় মহুয়া ভট্টাচার্যকে। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে জখম হয়েছিলেন শ্বশুর ও শাশুড়ি। তবে মহুয়ার আড়াই মাসের শিশুসন্তান বেঁচে গিয়েছিল। ঘটনার দু’দিন পরে মৃত্যু হয় ওই বধূর। উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলার বাসিন্দা মহুয়ার এক আত্মীয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ প্রথমে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করে। পরে মহুয়ার মৃত্যু হলে খুনের ধারা যুক্ত করে ননদ এবং স্বামী গ্রেফতার হয়। যদিও ঘটনার সময়ে রাজ্যের বাইরে ছিল অরিন্দম।
তদন্তকারীদের দাবি, ২০০২ সালে মহুয়ার সঙ্গে অরিন্দমের বিয়ের পর থেকেই দু’জনের মধ্যে অশান্তি লেগে থাকত। মৃত্যুর আগে পুরো ঘটনার বিবরণ দিয়ে যান মহুয়া। তার ভিত্তিতে পুলিশ ননদ মৌসুমী এবং স্বামী অরিন্দমের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ আনে। পরে তারা কলকাতা হাইকোর্ট থেকে জামিন পায়।
পুলিশ সূত্রের খবর, বিয়ের পর থেকেই সব ঘটনা ডায়েরিতে লিখে রাখতেন মহুয়া। ২০০৪ সালে স্থানীয় থানায় পারিবারিক অশান্তির অভিযোগ দায়ের করেন। মহুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে পুলিশ সেটি উদ্ধার করে সিআইডি-র হস্তরেখা বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠায়। পরে তা আদালতের সামনেও পেশ করা হয়। এ ছাড়া এক প্রত্যক্ষদর্শী ঘটনার আগে ননদের সঙ্গে মহুয়ার অশান্তি এবং তাঁকে ঘরে বন্ধ করে রাখার বিবরণ দিয়েছিলেন আদালতে। এক তদন্তকারী জানান, মূলত এই তথ্যপ্রমাণের উপরে ভিত্তি করেই আদালত রায় দিয়েছে।