Bus

Transport: দূরপাল্লার বাসেও ‘রেষারেষি’, অস্বস্তিতে সংগঠন

কমিশন প্রথার কারণে বেসরকারি বাসের রেষারেষি করার অভিযোগ পুরনো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২২ ০৪:৪০
Share:

কমিশন প্রথার কারণে বেসরকারি বাসের রেষারেষি করার অভিযোগ পুরনো।

কমিশন প্রথার কারণে বেসরকারি বাসের রেষারেষি করার অভিযোগ পুরনো। মূলত কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা এবং হাওড়ায় ওই প্রথা চালু থাকায় একই রুটের দুই বাসের মধ্যে রেষারেষির জেরে নিরীহ যাত্রীরা দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন, সেই সংখ্যাও খুব কম নয়। কিন্তু কমিশন প্রথা চালু নেই, এমন দূরপাল্লার বাস রুটেও যাত্রী পাওয়া নিয়ে চালকদের মধ্যে বচসার জেরে সোমবার বারাসতে যে ভাবে এক চালককে চাপা দিয়ে মেরে ফেলার ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলের সকলেই স্তম্ভিত।

Advertisement

যাত্রী পাওয়া নিয়ে বেসরকারি বাসের রেষারেষি কমবে কী ভাবে, ভেবে পাচ্ছেন না পরিবহণ-কর্তারাও। জেলার বাস সংগঠন সূত্রের খবর, কলকাতা থেকে বহরমপুর এবং করিমপুর রুটের দু’টি বাস কৃষ্ণনগর পর্যন্ত মোটামুটি ভাবে একই রুট অনুসরণ করে। সোমবার ধর্মতলা থেকে বহরমপুরগামী বাসটি ছেড়েছিল দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে। দুপুর ১টা ১০ নাগাদ রওনা হয় করিমপুরগামী বাসটি। বারাসতে পুলিশ সুপারের অফিস থেকে কিছুটা দূরে, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে বহরমপুরগামী বাসের চাকায় সমস্যা দেখা দেয় বলে অভিযোগ। রাস্তার ধারে সেটির মেরামতি চলাকালীন করিমপুরগামী বাসটি এসে দাঁড়ায়। তখনই অকারণে দেরি করার অভিযোগে বচসা শুরু হয় দুই বাসের চালকের। তার মধ্যেই করিমপুরগামী বাসটি বহরমপুরগামী বাসের কিছু যাত্রীকে তুলতে শুরু করায় বিবাদ চরমে পৌঁছয়।

এই অবস্থায় বহরমপুরগামী বাসের চালক কমল সরকার করিমপুরের বাসটির চালকের কেবিনে উঠে চাবি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। সেই সময়ে ওই বাসের চালক গাড়ি চালিয়ে দিলে কমল মাটিতে পড়ে যান। তাঁর উপর দিয়ে চলে যায় বাসটির চাকা।
'
বাসমালিক সংগঠনগুলি জানাচ্ছে, জেলার দূরপাল্লার বাস চালকদের বেতনের ভিত্তিতে চলে। বাস চালানোর খরচ বহন করে যাত্রী-ভাড়া থেকে আয়ের একটি নির্দিষ্ট অংশ চালক এবং কন্ডাক্টরকে দেন বাসের মালিক। সোমবার বহরমপুরগামী বাসে ২০-২৫ জন যাত্রী ছিলেন। সেখান থেকে বেশ কিছু যাত্রী নেমে যাওয়ায় আপত্তি তুলেছিলেন কমল। এ সম্পর্কে ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসের’ সহ-সম্পাদক তথা বারাসতের বাসমালিক সংগঠনের নেতা রাজেশ হরি বলেন, ‘‘বেশ কয়েক জন যাত্রী নেমে যাওয়ায় আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা থেকেই ওই বচসা দেখা দেয়। তবে যা ঘটেছে, কোনও ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।’’ ‘অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির’ সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সময়সারণি অনুযায়ী দূরপাল্লার দু’টি বাসের মধ্যে ব্যবধান অনেক ক্ষেত্রেই যথেষ্ট নয়। কিন্তু তার জন্য এ ভাবে কাউকে চাপা দেওয়া মানা যায় না।’’

Advertisement

‘জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটস’-এর সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেলায় কমিশন প্রথা চালু নেই। তার পরেও দু’টি বাসের মধ্যে সময়ের ব্যবধান কম থাকায় সমস্যা হচ্ছে।’’ ঘটনা ঘিরে অস্বস্তিতে বাসমালিক সংগঠনও। আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত দূরপাল্লার বেসরকারি বাস সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দীপু পাণ্ডে বলেন, ‘‘দু’টি বাস-রুট থেকেই অভিযোগ এসেছে। কী ঘটেছে, জানার চেষ্টা করছি।’’ পরিবহণ আধিকারিকদের দাবি, বিভিন্ন দূরপাল্লার রুটে বাসের চাহিদা দেখেই পারমিট দেওয়া হয়। তার পরেও কেন এমন ঘটল, পুলিশ দেখছে। পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘আধিকারিকদের বলেছি বিস্তারিত খবর নিতে। এই প্রাণহানি মেনে নেওয়া যায় না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement