আদালতে প্রবেশের পথে সৌরভ চৌধুরী। — নিজস্ব চিত্র।
যাদবপুরকাণ্ডে ধৃত সৌরভ চৌধুরী আবারও দাবি করলেন, তিনি ‘নিরপরাধ’। মঙ্গলবার পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। আদালতে ঢোকার সময়েই তিনি ওই মন্তব্য করেন। গ্রেফতারের পর গত ১২ অগস্ট সৌরভকে প্রথম আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। সেই দিনও তিনি দাবি করেছিলেন, ‘‘আমি নিরপরাধ।’’ এর পরে রবিবারও প্রিজ়ন ভ্যান থেকে একই কথা বলেছিলেন তিনি। মঙ্গলবার সেই সৌরভ দাবি করলেন, তাঁকে ‘অপরাধী’ সাজানো হয়েছে।
আলিপুর আদালতে মঙ্গলবার হাজির করানো হয় যাদবপুরকাণ্ডে ধৃত সৌরভ, মনোতোষ ঘোষ এবং দীপশেখর দত্তকে। তাঁদের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হয়েছে। আদালতে প্রবেশের সময় সৌরভ বলেন, ‘‘আমি অপরাধী নই। অপরাধী সাজানো হয়েছে আমাকে।’’ এর পরেই আদালতের ভিতরে সৌরভকে নিয়ে যায় পুলিশ। বাকি দুই অভিযুক্ত মনোতোষ এবং দীপশেখর যদিও মুখ খোলেননি। এর আগে রবিবার প্রিজ়ন ভ্যান থেকে সৌরভ দাবি করেছিলেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের কোনও ঘটনা ঘটেনি। মৃত ছাত্র নিজেই হস্টেলের বারান্দা থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। যাদবপুরকাণ্ডে সেটাই প্রথম কোনও অভিযুক্ত প্রকাশ্যে এ ভাবে অভিযোগ খারিজ করেন। সৌরভ দাবি করেন, গরিব বলে তাঁদের ফাঁসানো হচ্ছে। কোনও র্যাগিং হয়নি। পুলিশ তদন্ত করবে সেটা। বারান্দা থেকে ঝাঁপ দিয়েছে ওই ছাত্র। এটুকুই তাঁদের চোখের সামনে ঘটেছে। তাঁর কথায়, ‘‘মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ মিথ্যা। জিবি কী কারণে হয়েছে, আমি জানি না। আমরা কোনও অপরাধী নই। আমরা ন্যায্য বিচার চাই।’’
গত ১২ অগস্ট সৌরভকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয় প্রথম বার। বিচারক ২২ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন। আদালতে সৌরভের আইনজীবী অরিন্দম দাস সওয়াল করেছিলেন, সৌরভ মৃত পড়ুয়ার সহপাঠী, রুমমেট, বন্ধু ছিলেন না। সৌরভের ফোন থেকে ফোনও করা হয়নি। যার ফোন থেকে ফোন করা হয়েছিল, সেটা দেখা হোক। অন্য দিকে, আদালতে সরকারি কৌঁসুলি সৌরিন ঘোষাল জানিয়েছিলেন, তিন জনের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে। দু’টি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তার মধ্যে সৌরভের ফোনও রয়েছে। ওই ফোনের ‘কল ডিটেলস্’ খতিয়ে দেখা হবে। যাদবপুরে প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুতে ইতিমধ্যে ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতদের মোবাইল থেকে ‘তথ্য’ উদ্ধার করেছে পুলিশ। কী রয়েছে সেই তথ্যে, এখন সেই প্রশ্নই উঠছে। পুলিশের একাংশ মনে করছে, এই তথ্য তদন্তে সাহায্য করবে। ধৃতদের বয়ানের সঙ্গেও এই তথ্য মিলিয়ে দেখতে চাইছে পুলিশ, জানা গিয়েছে তদন্তকারীদের সূত্রে।